দেশীয় চলচ্চিত্র থেকে যখন অশ্লীলতার দোষে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন, তখন নির্মাতা এফ আই মানিক নির্মিত ব্যাবসায়িক ভাবে সফল ‘কোটি টাকার কাবিন’ চলচ্চিত্রটি ফের দর্শকদের হলে টেনে আনে।
শুধু তাই নয়, ধারবাহিকভাবে তিনি ‘দাদিমা’, ‘চাচ্চু’ ও ‘পিতার আসন’ নামে পরপর চারটি ব্যাবসায়িক সফল চলচ্চিত্র নির্মাণ করে ইন্ডাস্ট্রি চাঙা করতেও ভূমিকা রাখেন।
২০১০ সালে এ নির্মাতার ‘জর্জ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’ চলচ্চিত্রটি শিডিউল জটিলতায় পড়লে নিজের লগ্নিকৃত প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির মুখোমুখি পড়েন তিনি।
এ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর স্ত্রী’র চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতেও অক্ষম হয়ে পড়েছেন নির্মাতা এফ আই মানিক। তিনি বলেন, “ নিজে প্রযোজনা করার চিন্তা করে জীবনের সব কামাই দিয়ে নির্মাণ শুরু করেছিলাম। ছবিটি ছিল ‘জর্জ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’। সেই ছবিটি রাজ্জাক ভাই, সোহেল রানা সাহেব, আলমগীর সাহেব, শাকিব খানকে নিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু শিডিউল জটিলতায় তা সময়মতো শেষ করতে না পেরে আজ আমি পথের ফকির।”
এদিকে নির্মাতার দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছেন সফল ব্যবসায়ী ও আলোচিত চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। ২১ সেপ্টেম্বর এ নায়ক নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে সকলের প্রতি নির্মাতা এফআই মানিকের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
অনন্ত জানান, নির্মাতা এফআই মানিক তার কাছে অর্থ সাহায্যের জন্য গিয়েছিলেন। তবে, সাহায্য হিসেবে নয়, কর্তব্যের জায়গা থেকেই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন অনন্ত।
অনন্ত বলেন, “এই স্বনামধন্য পরিচালক অর্থের অভাবে স্ত্রী’র চিকিৎসা সঠিকভাবে চালাতে পারছেন না। যদিও তা আমি জানতাম না, কিন্তু গতকাল হঠাৎ তিনি আমার অফিসে এসে উপস্থিত হন। সে সময় আমি অফিসে উপস্থিত না থাকায় তাকে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়, যা আমার জন্য ব্যর্থতা। কারণ আমার জন্য এত বড় মাপের পরিচালককে অপেক্ষা করতে হয়েছে।
যখন উনার মুখোমুখি হই, তখন তার চেহারা বেশ মলিন ছিলো। তিনি আমাকে তার কষ্টের কথার সাথে, অর্থের অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারছেন না সে কথা বলেন। তার কথা শুনে আমি বেশ আশাহত হই, তার মত গুণী পরিচালককে অর্থের অভাবের কারণে আজ দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।”
অনন্ত আরও বলেন, “যার হাত ধরেই অনেক তারকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যদিও এই গুণী পরিচালকের সাথে আমার কাজ করার সৌভাগ্য হয়নি। তবুও এ বিখ্যাত পরিচালক আমার কাছে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাবেন, তা হবে অনন্ত জলিলের অন্যতম ব্যর্থতা। তাই আমার যতটুকু সামর্থ ততটুকু দিয়ে তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।
এবং আশাও করি যে প্রতিষ্ঠিত তারকা এবং চলচ্চিত্র পরিবারের সদস্যসহ অন্যরাও এফ আই মানিক ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন । এটা সাহায্য বললেও ভুল হবে, এটা আমাদের কর্তব্য। আশাকরি তার মত কোনো গুণীজনকে যেন দ্বারে দ্বারে যেতে না হয়, আমরাই যেন তাদের প্রয়োজনে তাদের কাছেই পৌঁছে যাই।”