‘মৃত্যুর পরও জীবন্ত সেলিম আল দীন’

ঔপনিবেশিক নাট্যধারা প্রত্যাখ্যান করে ‘নাট্যাচার্য’ সেলিম আল দীন নতুন এক নাট্যরীতি প্রবর্তন করে বাংলা নাটককে নতুন এক পর্যায়ে উন্নীত করে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন নাট্যব্যক্তিত্বরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2017, 04:03 PM
Updated : 20 August 2017, 11:45 AM

সেলিম আল দীনের ৬৮তম জন্মদিন উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়া সেলিম আল দীন উৎসবে এসে স্মৃতিচারণ, আলোচনা ও নাটকে তাকে স্মরণ করেন তারা।

শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এই উৎসবের উদ্বোধন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম।

‘তোমার সম্মুখে অনন্ত মুক্তির অনিমেষ ছায়াপথ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে উৎসব যৌথভাবে আয়োজন করেছে ঢাকা থিয়েটার, গ্রাম থিয়েটার ও সেলিম আল দীন উৎসব পর্ষদ; সহযোগিতা করছে শিল্পকলা একাডেমি।

বক্তৃতায় অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, “অধ্যাপক সেলিম আল দীন বাংলা সংস্কৃতি ও নাটকে এমন এক আবহ তৈরি করে গেছেন যে, তিনি বারবার জীবন্ত হয়ে বা জোরালোভাবে ফিরে আসেন। মৃত্যুর পরও তিনি জীবন্ত।”

ঢাকা থিয়েটারের দলপ্রধান নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, “ঔপনিবেশিক নাট্যধারা প্রত্যাখ্যান করে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন নতুন এক নাট্যরীতি প্রবর্তন করে বাংলা নাটককে নতুন এক পর্যায়ে উন্নীত করে গেছেন। আফসোস, তিনি কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। তারই দেখানো পথে হেঁটে নাট্য নির্মাতারা নাটক নির্মাণ করবেন, দর্শক সে নাটক গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান যাই করুক না কেন।”

আলোচনা পর্বে আরও ছিলেন অভিনেত্রী শিমুল ইউসুফ ও নাট্যব্যক্তিত্ব কামাল বায়েজিদ।

এর আগে শুক্রবার সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলিম আল দীনের সমাধিতে নাট্যকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সেলিম আল দীন উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। বিকালে শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে ছিল প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা সভা।

‘শকুন্তলা প্রসঙ্গে’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। এতে আলোচক ছিলেন অধ্যাপক আফসার আহমেদ, নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ ও শিমুল ইউসুফ।

শনিবার বিকাল ৪টায় জাতীয় নাট্যশালার লবিতে আয়োজন করা হয় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার।

এ অনুষ্ঠানে প্রদান করা হয় ‘সেলিম আল দীন পদক’। এ বছর পদক পেয়েছেন নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি এ পদকটি নিতে পারেননি।

এছাড়া এ অনুষ্ঠানে ‘মীর মকসুদ-উস-সালেহীন-বজলুল করিম পদক’, ‘ফওজিয়া ইয়াসমিন শিবলী পদক’ প্রদান করা হয়। ‘মীর মকসুদ-উস-সালেহীন-বজলুল করিম পদক’ পেয়েছেন লোকনাট্যদলের প্রধান ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ‘ফওজিয়া ইয়াসমিন শিবলী পদক’ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুদীপ চক্রবর্তী।

পদক প্রদানের পর নাট্যশালার মূল মঞ্চে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা থিয়েটারের নাটক ‘ধাবমান’। রোববার মঞ্চস্থ হবে বোধন থিয়েটারের নাটক ‘চন্দ্রাবতীর কথা’, বঙ্গলোক পরিবেশন করবে সেলিম আল দীনের গান ও রচনা নিয়ে আলেখ্য ‘রূপচান সুন্দরীর পালা’।