শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক পাচ্ছেন আলী যাকের, মফিদুল হক

সুরস্রষ্টা শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্মৃতিবিজড়িত ‘শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক’ পাচ্ছেন নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের এবং লেখক-প্রাবন্ধিক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2017, 03:07 PM
Updated : 17 August 2017, 03:17 PM

শহীদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশনের সদস্যসচিব ও শহীদ-কন্যা শাওন মাহমুদ জানান, এ বছর দেশের সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদক পাচ্ছেন তারা।

আগামী ৩০ অগাস্ট আলতাফ মাহমুদের অন্তর্ধান দিবসে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুই গুণীর হাতে পদক তুলে দেওয়া হবে।

১৯৫৩ সালে প্রখ্যাত সাংবাদিক আব্দুল গাফ্‌ফার চৌধুরী রচিত গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানে নতুন করে সুর করেন আলতাফ মাহমুদ। তিনবার এ কাজটি করার পর নতুন সুর চূড়ান্ত করেন। গানটির প্রথম সুর করেছিলেন আব্দুল লতিফ।

১৯৫৬ সালে আলতাফ মাহমুদ করাচি বেতারে প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন। তিনি 'ইত্তেহাদে ম্যুসিকি' নামে দশ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান প্রযোজনা ও পরিচালনা করতেন। করাচি থেকে ঢাকা ফেরার পর আলতাফ মাহমুদ ১৯টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এরমধ্যে বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলো হলো- জীবন থেকে নেয়া, ক্যায়সে কাহু, কার বউ, তানহা, বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, দুই ভাই, সংসার, আঁকাবাঁকা, আদর্শ ছাপাখানা, নয়নতারা, শপথ নিলাম, প্রতিশোধ, কখগঘঙ, কুচবরণ কন্যা, সুযোরাণী দুয়োরাণী, আপন দুলাল, সপ্তডিঙ্গা প্রভৃতি।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই শিল্পীকে নতুন পরিচয়ে পায় বাংলাদেশিরা। তিনি তখন একাধারে গানের কাজ করেছেন, পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের পরম আশ্রয় হয়ে ওঠেন। নিজে গেরিলা যোদ্ধা ও সংগঠক ছিলেন। তার বাসায় গেরিলাদের গোপন ক্যাম্প স্থাপন করেন। কিন্তু ক্যাম্পের কথা ফাঁস হয়ে গেলে ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট পাকিস্তান বাহিনী তাকে আটক করে। তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। তার বাসা থেকে আরও অনেক গেরিলা যোদ্ধাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এদের অনেকের সাথে তিনিও চিরতরে হারিয়ে গেছেন।

১৯৭৭ সালে মহান এ মানুষটিকে একুশে পদক দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে সংস্কৃতিক্ষেত্রে অসামান্য আবদান রাখায় শহীদ আলতাফ মাহমুদকে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

কবি শামসুর রাহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

অনাড়ম্বর আয়োজনে পালিত হল কবি শামসুর রাহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী।

বৃহস্পতিবার সকালে বনানীতে কবির কবরে পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার ভ্রাতৃষ্পুত্র ব্যারিস্টার তৌফিকুর রাহমান চৌধুরী।

পরে জাতীয় কবিতা পরিষদ, শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এছাড়া কবির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় কবিতা পরিষদের সাবেক সভাপতি কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক প্রমুখ।

২০০৬ সালের ১৭ অগাস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শামসুর রাহমান।

‘শিল্পবন্ধুদের শিল্পযাত্রা’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শতাধিক শিল্পীদের অংশগ্রহণে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় ‘শিল্পবন্ধুদের শিল্পযাত্রা’ আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি।

শুক্রবার সকাল ৭টায় শিল্পকলা একাডেমিতে শিল্পযাত্রার উদ্বোধন করবেন নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান ও একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে পরিবেশিত হবে পারফর্মিং আর্টস।

‘শিল্পবন্ধুদের শিল্পযাত্রা’য় রয়েছে ৪টি পারফর্মিং আর্টস।

নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশ’

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস বিপা যৌথভাবে আয়োজন করবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশ’।

এই নৃত্যনাট্যের মূল পরিকল্পনা, নৃত্য পরিচালনা ও পোষাক পরিকল্পনা করেছেন এ্যানি ফেরদৌস। নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশের’ মানুষদের কঠিন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলবার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ মুখোশ। এই মুখোশ তৈরি করেছেন আমেরিকান শিল্পী জিল রাইনিয়ার।

শিল্পকলা একাডেমি ও বিপা’র এই যৌথ প্রযোজনায় অংশগ্রহণ করার জন্য নিউইয়র্ক থেকে এসেছে ২০ সদস্যের একটি দল। তাদের সাথে আরো যোগ দিবেন শিল্পকলার আটজন নৃত্যশিল্পী এবং কিছু শিশু নৃত্যশিল্পী।