‘তোমার শূন্যতা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়’

ক্যালিফোর্নিয়ার ছোট্ট গানের দল ‘জিরো’ থেকে লিঙ্কিন পার্কের কোটি কোটি ভক্তের প্রিয় রক ব্যান্ডে পরিণত হওয়ার পথে যার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি, সেই চেস্টার বেনিংটন নিজেই কেড়ে নিয়েছেন নিজের প্রাণ। প্রায় দুই দশক ধরে তার সঙ্গে কাজ করে যাওয়া সহকর্মীরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তার প্রস্থান।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2017, 03:38 PM
Updated : 25 July 2017, 03:38 PM

শোক সন্তপ্ত ভক্তদের পাশাপশি মাইক শিনোদা, ব্র্যাড ডেলসন, ডেইভ ফিনিক্স ফ্যারেল, জো হ্যানহ্যান্ড ও রব বউর্ডো এখনও মেনে নিতে পারেননি প্রিয় বন্ধু চেস্টারের এমন বিদায়। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিজেদের উত্তর আমেরিকা সফর বাতিল করে দলটি; এবারে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করলো চেস্টার বেনিংটনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

‘প্রিয় চেস্টার’ নামের ওই শ্রদ্ধাঞ্জলিতে তারা লিখেছেন,“তোমার প্রস্থান এমন এক শূন্যতার সৃষ্টি করেছে, যা কখনও পূরণ হবে না। এক ক্ষ্যাপাটে, আমুদে, সৃজনশীল, উদার এবং স্বপ্নবাজ কণ্ঠের অভাব এখন সবসময়ই তাড়িয়ে বেড়াবে আমাদের।”

শৈশবে যৌন নিগ্রহের শিকার বেনিংটন আজীবন লড়াই করেছেন নানাবিধ মানসিক সমস্যার সঙ্গে। বিগত বছরগুলোতে তার মাদকাসক্তিও চরমে উঠেছিল, যেটি প্রভাব ফেলছিল তার মানসিক স্বাস্থ্যে। এমনকী যে ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, সেই ঘরের মেঝেতেও পড়ে থাকতে দেখা গেল মদের খালি বোতল।

জীবনের নানাবিধ হতাশার কথা তিনি খোলাখুলিই বলে গেছেন লিঙ্কিন পার্কের গানগুলোর মধ্য দিয়ে। তাদের ‘নাম্ব’,‘ইন দি এন্ড’-এর মতো গানগুলোতে মানবমনের অন্তর্নিহিত লড়াইয়ের কথা। লিঙ্কিন পার্কের প্রথম অ্যালবাম ‘হাইব্রিড থিওরি’ প্রকাশের পর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারেও নিজের জীবনের কথা খোলাখুলি বলতেন বেনিংটন।

লিঙ্কিন পার্কের সদস্যরাও বলেননি সেসব কথা।

লিখেছেন,“আমরা বারবার নিজেদের মনে করানোর চেষ্ট করছি, যে দানব কেড়ে নিলো তোমাকে, সেটি আসলে সবসময় তোমার অংশই ছিল। কারণ এই দানবের তাড়নাতেই তো তুমি অমনভাবে গাইতে, যার কারণে মানুষ তোমার প্রেমে পড়েছিল। তুমি অকুতোভয়ে তোমার মনের দানবগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরতে, আর এভাবেই আমাদের সবাইকে আরও বেশি মানবিক হতে শিখিয়েছ তুমি।”

চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সংগীত জগতে আত্মহত্যার ঘটনা এই নিয়ে দ্বিতীয়। এর দুই মাস আগেই সাউন্ডগার্ডেন ও অডিওস্লেভের মতো জনপ্রিয় রক ব্যান্ডের ভোকাল ক্রিস কর্নেল আত্মহত্যা করেছিলেন গলায় ফাঁস লাগিয়েই। ৫২ বছর বয়সী কর্নেল ছিলেন বেনিংটনের কাছের বন্ধু।

বেনিংটনের স্মরণে আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ ব্যাধিকে চিরতরে দূর করতে অন্তর্জালে সচেতনতার কাজ শুরু করেছে লিঙ্কিন পার্ক। তার নামে দলটি চালু করেছে একটি মানসিক সহায়তার ওয়েবসাইট। এখানে জীবন নিয়ে হতাশায় ভোগা মানুষদের সাহায্যের জন্য রয়েছে একটি হেল্পলাইনের নম্বর, যেখানে টেক্সট ম্যাসেজ বা ফোনকলের মাধ্যমে মনোবিদদের সাহায্য নিতে পারবেন যে কেউ।