‘আমি যাদের জন্য শাবানা, আজকের এ পুরস্কার তাদের’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কাঁদলেন চিত্রনায়িকা শাবানা। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ (২৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত হলো দেশীয় চলচ্চিত্রের সম্মানজনক আসর ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠান। এ বছর যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পান শাবানা ও সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2017, 01:12 PM
Updated : 24 July 2017, 02:50 PM

নিজের অভিনয় জীবনে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য দিতে এসে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা এ নায়িকা বললেন, “আমি যাদের জন্য শাবানা, আজকের এ পুরস্কার তাদের।” 

১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অভিনয়শিল্পে অবদান রাখায় দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তবু সর্বশেষ পুরস্কার প্রাপ্তিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শাবানা। কান্নাভেজা ভাষণে তিনি বলেন,  “এই তো সেদিন আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা করতে গিয়েছিলাম। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী দু’হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। আমি জানি, তিনি যে সম্মান আমাকে সেদিন দিয়েছেন, তা সমস্ত শিল্পীর, শিল্পের। তিনি অসুস্থ পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”

দেশীয় চলচ্চিত্রের সংকট প্রসঙ্গেও বক্তব্য রাখেন তিনি। বলেন, “আমাদের চলচ্চিত্র আজ সংকটে। কিন্তু যেকোনও সংকটের মাঝে লুকিয়ে থাকে সমাধান। যখন আামাদের পাশে সবার প্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন তখন কোনও সংকটই থাকতে পারে না। প্রবাসে থাকলেও আমি জ্ঞাত হয়েছি। তিনি বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট করেছেন। বিপুল অর্থের মাধ্যমে বিএফডিসি আধুনিকায়ন করেছেন। জানতে পারি, তিনি ফোর-কে রেজুলেশনের প্রজেক্টরের ব্যবস্থা করছেন। যেখানে বিশ্বের অনেক দেশে এখনও টু-কে রেজুলেশন ব্যবহার করা হয়। আমি তাকে সাধুবাদ জানাই।”

অনুষ্ঠানে ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিসমুহের মধ্যে ২৫টি বিভাগে দেয়া হয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কারের ক্রেস্ট ও সনদ গ্রহণ করেন পুরস্কারপ্রাপ্তরা।

একনজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৫

আজীবন সম্মাননা : যুগ্মভাবে—শাবানা ও ফেরদৌসী রহমান; শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র : যুগ্মভাবে—‘বাপজানের বায়োস্কোপ’ (পরিচালক মো. রিয়াজুল মওলা রিজু) ও ‘অনিল বাগচীর একদিন’ (পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম); শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র : ‘একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি’ (চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর); শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক : যুগ্মভাবে—মো. রিয়াজুল মওলা রিজু (চলচ্চিত্র ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’) ও মোরশেদুল ইসলাম (চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’)।

অভিনয়: প্রধান চরিত্রে : যুগ্মভাবে—শাকিব খান (চলচ্চিত্র ‘আরো ভালোবাসব তোমায়’) ও মাহফুজ আহমেদ (চলচ্চিত্র ‘জিরো ডিগ্রি’); শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে : জয়া আহসান (চলচ্চিত্র ‘জিরো ডিগ্রি’); শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে : গাজী রাকায়েত (চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’); শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে : তমা মির্জা (চলচ্চিত্র ‘নদীজন’); শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী খল চরিত্রে : ইরেশ যাকের (চলচ্চিত্র ‘ছুঁয়ে দিল মন’); শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী : যারা যারিব (চলচ্চিত্র ‘প্রার্থনা’); শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার : প্রমিয়া রহমান (চলচ্চিত্র ‘প্রার্থনা’)।

সংগীত: শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: সানী জুবায়ের (চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’); শ্রেষ্ঠ গায়ক : যুগ্মভাবে—সুবীর নন্দী (তোমারে ছাড়িতে বন্ধু, চলচ্চিত্র ‘মহুয়া সুন্দরী’) ও এসআই টুটুল (উথাল পাতাল জোয়ার, চলচ্চিত্র ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’); শ্রেষ্ঠ গায়িকা : প্রিয়াংকা গোপ (আমার সুখ সে তো, চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’); শ্রেষ্ঠ গীতিকার : আমিরুল ইসলাম (উথাল পাতাল জোয়ার, চলচ্চিত্র ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’); শ্রেষ্ঠ সুরকার : এস আই টুটুল (উথাল পাতাল জোয়ার, ‘চলচ্চিত্র বাপজানের বায়োস্কোপ’);

কাহিনি, চিত্রনাট্য ও কলাকুশলী

শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার : মাসুম রেজা (‘বাপজানের বায়োস্কোপ’); শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার : যুগ্মভাবে মাসুম রেজা (‘বাপজানের বায়োস্কোপ’) ও মো. রিয়াজুল মওলা রিজু (‘বাপজানের বায়োস্কোপ’); শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা : হুমায়ূন আহমেদ (‘অনিল বাগচীর একদিন’); শ্রেষ্ঠ সম্পাদক : মেহেদী রনি (‘বাপজানের বায়োস্কোপ’); শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক : সামুরাই মারুফ (‘জিরো ডিগ্রি’); শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক : মাহফুজুর রহমান খান (‘পদ্ম পাতার জল’); শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক : রতন কুমার পাল (‘জিরো ডিগ্রি’); শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা : মুসকান সুমাইকা (‘পদ্ম পাতার জল’) এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান : শফিক (‘জালালের গল্প’)।