গণমাধ্যমগুলো তাকে একেবারে বাবা বানিয়ে দিয়েছে: মিম

কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির সিনেমায় অভিষিক্ত হয়েছেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘ইয়েতির অভিযানে’ বিশেষ একটি চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। কিছুদিন আগেই শুটিং শেষে সুইজারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন মিম। সামনে দুর্গাপূজায় ছবিটি মুক্তি পাবে। ‘ইয়েতির অভিযান’সহ নানা বিষয়ে গ্লিটজের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2017, 03:17 PM
Updated : 10 July 2017, 03:30 PM

গ্লিটজ: ‘ইয়েতির অভিযান’এর সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?

মিম: সৃজিত দা’র সঙ্গে যদিও ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ ছিলো না। কিন্তু তার অনেক কাজ আমি দেখেছি। আমারও কিছু কাজ উনি হয়তো ইউটিউবে দেখেছেন। পরিচিতি বলতে এই যা! গত এপ্রিলের দিকে মুম্বাই থেকে হঠাৎ উনার ফোন পেয়েছিলাম। দেখা করলাম। সবকিছু মিলে যাওয়াতে নাম লেখালাম ছবিতে।

ছবি:ইয়েতির অভিযান, মিমের ফেইসবুক থেকে নেয়া

 

গ্লিটজ: কাজের অভিজ্ঞতা কেমন হলো?

মিম: অনেক বড় বড় শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছি। আর সৃজিতদা তো খুবই জনপ্রিয়। তার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আসলেই অনেক বড় বিষয়। সুযোগটা যেহেতু পেয়েছি, তাই সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। আমার প্রথম সিন দেখেই সৃজিতদা জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, তোমার কাজে আমি খুবই হ্যাপি। আমি এটা কখনোই আশা করিনি। এটা আমার জন্য অনেক ভালোলাগার। আমি যতটুকু চিন্তা করেছি তার চেয়েও বেশি পেয়েছি। সুইজারল্যান্ডে দারুণ সময় কেটেছে টিমের সঙ্গে। যীশু, বুম্বাদা, ফেরদৌস, সৃজিতদা-সবার সঙ্গে কাজটা এনজয় করেছি।

গ্লিটজ: আপনার চরিত্রটা কেমন?

মিম: চরিত্র নিয়ে বলা নিষেধ আছে! তবে যারা সিরিজটি পড়েছে তারা বুঝতে পারবেন। আর যারা পড়েনি তাদেরকে হলে গিয়ে দেখতে হবে।

ছবি:ইয়েতির অভিযান, মিমের ফেইসবুক থেকে নেয়া

 

গ্লিটজ: কাকাবাবু সিরিজ আপনি পড়েছিলেন আগে?

মিম: নাহ্! স্ক্রিপ্টটা পড়েছি শুধু। বেশ ক’বার পড়ে চরিত্রটি আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি।

গ্লিটজ: চরিত্রটি নিয়ে কতটা আশাবাদী আপনি?

মিম: অবশ্যই চরিত্রটা দারুণ। সেই সঙ্গে চ্যালেঞ্জিংও বটে। তবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে আর অন্যকিছু ভাবিনি। চরিত্রেই মধ্যেই ডুবে ছিলাম। আমার জন্য সেকেন্ড টেক নিতে হয়নি। আমার সব সিনই ওকে ছিল। এখন ক্যামেরার কাজের জন্য কিংবা সহশিল্পীর কারণে যদি আবার টেক নিতে হয় সেটা আলাদা বিষয়।

গ্লিটজ: শুটিংয়ে কোন স্মৃতিটা আমার মনে দাগ কেটে আছে?

মিম: কলকাতায় শুটিং চলছিল। একটা সিনে পিস্তল থেকে গুলি ছুঁড়তে হবে আমাকে। এমনিতেই গুলির শব্দে ভয় পেতাম। তার উপর সিকোয়েন্সের সময় গুলির শব্দ এতো বেশি ছিল যে কানে ঝিঁ ঝিঁ ধরে গেল! দুম করে বসে পড়লাম। ব্যথায় মাথাটা টনটন করতে লাগলো। এগিয়ে এলেন সৃজিতদা। উনি এসে দেখলেন, আমার চোখে জল! বললেন, কাঁদছো? আমি হাসতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, আসলেই আমার চোখে জল। ঘটনাটি নিয়ে তো শুটিং জুড়ে সবাই খুব মজা করতে লাগলো। যীশুদা তো পারলে আমার মতো অ্যাক্টিং করে দেখায়।

প্রসেনজিতের সঙ্গে, মিমের ফেইসবুক থেকে নেয়া

 

গ্লিটজ: বেশকিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, প্রসেনজিতকে নাকি আপনি বাবা ডাকছেন। ঘটনাটা কী?

মিম: হা হা। নিউজগুলোতে লিখেছে, আমি নাকি বুম্বাদাকে বাবা ডাকি! এটা কিন্তু আমি বলিনি। আসলে যা ঘটেছে তা হলো, বুম্বাদা কথায় কথায় আমাকে বলেছিলো, ‘মা, খেয়েছিস’। কিন্তু গণমাধ্যমগুলো তাকে একেবারে বাবা বানিয়ে দিয়েছে। আসলে আমি তো উনাকে বাবা না, বুম্বা দা ডাকবো। তবে উনার মতো একজন বড়মাপের অভিনেতা আমাকে মেয়ের মতো করে আপন করে নিয়েছেন এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

গ্লিটজ: প্রসেনজিতের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

মিম: উনি খুবই বন্ধুভাবাপন্ন। উনার সঙ্গে থাকলে প্রত্যেকটা মুহূর্ত শেখা যায়। খাওয়া-দাওয়া, চালচলন দারুণভাবে মেইনটেইন করেন। এরকম নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত শিল্পী খুব কমই দেখেছি।

ছবি:শিথিল রহমান

 

গ্লিটজ: ঢালিউড ও টালিগঞ্জ-দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই কাজের অভিজ্ঞতা হলো আপনার। পার্থক্য কেমন দেখলেন?

মিম: কাজের ধরণ অনেকটাই এক রকম। তবে ওরা একটু বেশি প্রফেশনাল। আমরাও প্রফেশনাল। কিন্তু ওরা একটু বেশি।

গ্লিটজ: ছবিটি তো যৌথ প্রযোজনার। এই যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নিয়ে দেশে আন্দোলন চলছে। এই ধরনের চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে আপনার অবস্থান কী ?

মিম: আমি চাই যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র হোক। অবশ্যই সেটা যৌথ প্রযোজনার নিয়মনীতি মেনে। আর যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রগুলোতে দুই দেশের বিনিয়োগ থাকে বলে বাজেটটাও বেশি থাকে। ফলে কাজটা দেখতেও ভালো লাগে।

গ্লিটজ: যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নিয়ে গড়ে উঠা আন্দোলনে আপনাকে দেখা যায়নি। কারণ কী?

মিম: আমি আসলে শুটিংয়ে ছিলাম। সেকারণে থাকতে পারিনি।

গ্লিটজ: এবার আসি দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিতে। কয়টি সিনেমা আপনার হাতে আছে?

মিম: মনতাজুর রহমান আকবরের ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ ছবির কাজ শেষ হবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়া তারেক শিকদারের ‘দাগ’ ও সৈকত নাসিরের ‘পাষাণ’ ছবিরও কিছু অংশের শুটিং বাকি রয়েছে। শিগগিরই শেষ হবে ছবিগুলো।

গ্লিটজ: বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দায়ও দেখা যায় আপনাকে। একসঙ্গে দুই পর্দায় অভিনয় চালিয়ে যেতে চান?

মিম: ছোটপর্দায় বছরে একটা কাজ করি। কোনো উৎসবে যদি বলি, একটা নাটক করবো তাহলে দশটা স্ক্রিপ্ট হাজির হয়। প্রোডাকশন হাউস, নির্মাতা দেখে বেছে বেছে দু’একটা কাজ করি।

গ্লিটজ: এবার ঈদে আপনার কোন চলচ্চিত্র আসছে?

মিম: নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে দুর্গাপূজায় ‘ইয়েতির অভিযান’ মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটি যৌথ প্রযোজনার ।