‘যৌথ প্রতারণা’র বিরুদ্ধে এফডিসিতে ধর্মঘট, সেন্সরবোর্ড ঘেরাও

চলচ্চিত্র নির্মাণে যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে চলচ্চিত্রের ১৪টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত চলচ্চিত্র ঐক্যজোট।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2017, 02:22 PM
Updated : 18 June 2017, 02:22 PM

আন্দোলনে-স্লোগানে যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের অনিয়ম ঠেকাতে প্রতিবাদে মেতে উঠেছেন দেশিয় চলচ্চিত্রের নির্মাতা-তারকা ও কলাকুশলীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী রোববার দুপুর ১১টায় এফডিসিতে ধর্মঘট কর্মসূচীর মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেন চলচ্চিত্রের ১৪টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত চলচ্চিত্র ঐক্যজোট। পরে তারা এফডিসির মূল ফটকের সামনে এক ঘন্টা অবস্থান নেন। আসছে ঈদে মুক্তিসম্ভাব্য যৌথপ্রযোজনার দুই চলচ্চিত্র  ‘বস টু ’ ও  ‘নবাব’ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ এনে যৌথপ্রযোজনার চলচ্চিত্রের অনিয়ম ঠেকাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতারা।

এ সময়, বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্রের কর্তাব্যক্তিরা। অভিনেতা ও প্রযোজক ডিপজল বলেন, “ইন্ডিয়ান বা ভিনদেশি ছবির অবৈধ মুক্তি এদেশে বন্ধ করতে যত প্রতিবাদ করা লাগে আমরা করব। সিনেমা হলের কিছু মালিক দালালদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। যদি এদেশে যৌথ প্রযোজনার নামে প্রতারণার ছবি চলে তবে সিনেমা হল সিলগালা করা হবে।”।

পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, “ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করতে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠা করা এই এফডিসি বাঁচাতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, “যৌথ প্রযোজনার নামে যারা প্রতারণা করছে তারা চলচ্চিত্রের রাজাকার। তাদের ছবি এদেশে চলবে না।”

এফডিসির সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন শেষে আন্দোলনকারীরা সেন্সরবোর্ড ঘেরাওয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন। বেলা ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ইস্কাটনে অবস্থিত সেন্সরবোর্ড কার্যালয়ের সামনে ঘেরাও করেন তারা।

ঘেরাও কর্মসূচীতে প্রতিবাদী বক্তব্যে চিত্রনায়ক ফারুক বলেন, ‌“আমাদের দেশের চলচ্চিত্র মানুষের কথা বলে, স্বাধীনতার কথা বলে। ৬৯ এ বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে চলচ্চিত্র বিকাশিত হয়। সেই চলচ্চিত্রে আজ ভিনদেশিদের দালালদের কালো থাবা। আমাদের সেন্সর বোর্ড আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের কথা না ভেবে আর কারো কথা ভাবলে আমরা মানবো না।”

এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর অনুরোধে আন্দোলন চালু রেখেই আহ্বানে মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে আলোচনার জন্য যান চলচ্চিত্রের কর্তাব্যক্তিরা। মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সহ সভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলক খোকন, যুগ্ম মহাসচিব শাহীন সুমন, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।

কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন অভিনয়শিল্পী রুবেল, পপি, জায়েদ খান, ইমন, সাইমন, বাপ্পি, পরীমনি, শান, কায়েস আরজু, নিঝুম রুবিনা, মৌমিতা মৌ, শিমুল খান, সুব্রত, পরিচালক-প্রযোজকসমিতির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সমিতির নেতা-কর্মীরা।

প্রসঙ্গত, ঈদে মুক্তিসম্ভাব্য যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘বস টু’ ও ‘নবাব’ চলচ্চিত্র দুটির বিরুদ্ধে অনিয়মের আশঙ্কা করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।  ‘বস টু’ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে যৌথপ্রযোজনার প্রিভিউ কমিটির আপত্তি স্বত্তেও মন্ত্রণালয়ের ফাঁক গলে চলচ্চিত্রটি এখন সেন্সরবোর্ডে। জানা যায়, যৌথ প্রযোজনার প্রিভিউ কমিটি ‘বস ২’ ছবিতে নীতিমালা মানা হয়নি এ মর্মে তথ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে ‘ভবিষ্যতে আর নীতিমালা ভাঙা হবে না’ এ মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়পত্র নেয় সিনেমাটির প্রযোজকেরা। এ ঘটনার পরই আন্দোলনে নামে চলচ্চিত্র ঐক্যজোট।