‘গডফাদার’দের মিলনমেলায়!

নিউ ইয়র্কের ট্রাইবেকা ফিল্ম ফেস্টিভালের শেষ রজনীটা এবার ছিল অন্যান্যবারের চেয়ে একটু বিশেষ। কারণ, ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই রাতেই একত্রিত হন হলিউডের মাফিয়া মুভি ক্লাসিক ‘দ্য গডফাদার’-এর কলা-কুশলীরা!

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2017, 03:33 PM
Updated : 30 April 2017, 03:33 PM

প্রায় ছয় হাজার দর্শকের সঙ্গে বসে এই দিন ‘দ্য গডফাদার’ এবং ‘দ্য গডফাদার টু’ দেখেন সিনেমা দুটির নির্মাতা ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা, অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো, আল পাচিনো, ডায়ানে কিটন, জেমস কান, টালিয়া শায়ার এবং রবার্ট ডুভাল।

কপোলা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন সিনেমাদুটি দেখতে গিয়ে। বলেন,“আমি অনেকদিন এই ছবিগুলো দেখিনি। এগুলো দেখতে দেখতে সেসব দিনের কথা মনে পড়ছিল। আমি অনেক কিছু ভুলেই গিয়েছিলাম। সিনেমাগুলো বানাতে গিয়ে আমি আমার নিজের এবং আমার পরিবারের অনেক ব্যাপার ঢুকিয়ে দিয়েছি!”

নয়টি অস্কার জেতা সিনেমাদুটি তৈরি করতে গিয়ে প্রযোজনা সংস্থার নানা রকম বায়নাক্কা সামলানোর কথাও কপোলা শোনান দর্শকদের।

মার্লোন ব্র্যান্ডো, পঞ্চাশের দশকের ঝলমলে কেরিয়ারের পর টানা সাতটি ফ্লপ সিনেমায় অভিনয় যাকে ঠেলে দিয়েছিল হতাশার অন্ধকারে, ডন কর্লিওনির চরিত্রে তাকে কিছুতেই নিতে চায়নি প্রযেজকেরা।

“তারা ব্র্যান্ডোকে ঘৃণা করতো। আমাকে বলা হয়েছিল, ব্র্যান্ডোকে নিলে সিনেমাটির ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে,” বলেন কপোলা।

অথচ এই চরিত্রে অভিনয় করেই ১৯৭২ সালের সেরা অভিনেতার অস্কার জিতে নেন ব্র্যান্ডো! তার সংলাপ, “আই অ্যাম গোয়িং টু মেক দেম অ্যান অফার দে কান্ট রিফিউজ” হয়ে দাঁড়ায় সিনেমা ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় সংলাপ।

মাইকেল কর্লিওনি’র চরিত্রে আল পাচিনোকেও ঠিক মনে ধরেনি প্রযোজকদের।

কপোলা বলেন, “কলেজ পাস শিক্ষিত মাইকেল কর্লিওনির চরিত্রে আল পাচিনোকে বহুবার স্ক্রিন টেস্ট দিতে হয়েছিল। তার কারণ প্রযোজদের মনে হয়েছিল এই চরিত্রের জন্য সে বেশ খাটো, আর তারা চাইছিল রবার্ট রেডফোর্ড অথবা রায়ান ও’নিলকে নিতে।”

“কিন্তু যতোবারই আমি চিত্রনাট্যে চোখ বুলাতাম, মাইকেলের চরিত্রে আমার চোখের সামনে পাচিনোই ভেসে উঠতো। বিশেষ করে সিসিলি’র দৃশ্যগুলো এলেই তার কথা মনে হতো।”

তবে পাচিনো’র নিজের কিন্তু পছন্দ ছিল মাইকেলের ক্ষ্যাপাটে বড় ভাই সনি’র চরিত্রটি। আর কপোলাকেও, তাকেই মাইকেল-এর চরিত্রে পছন্দ করায় পাগলাটেই ভাবতেন তিনি।

“আমি ভাবতাম, এটা হয় কোনো কৌতুক, অথবা কোনো স্বপ্ন। এরপরই শুরু হলো প্রযোজকদের আমাকে না চাওয়া আর ফ্রান্সিস-এর (কপোলা) আমাকেই মাইকেলের চরিত্রে চাওয়া,” বলেন পাচিনো।

মার্লোন ব্র্যান্ডো মারা গেছেন ২০০৪ সালে; তবে দলের বাকি সদস্যরা এখনও বেঁচে আছেন। তাদের মিলনমেলাতেই স্মরণীয় এক তারা ঝলমলে রাত দেখতে পেল ট্রাইবেকা ফিল্ম ফেস্টিভাল।