‘লাকী আখান্দ ছাপিয়ে গেছেন সময়কেও’

সদ্য প্রয়াত শিল্পী লাকী আখান্দ-এর গান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে করেছে অনুপ্রাণিত। তার কাজে অনুপ্রাণিত এমনই তিন প্রজন্মের কথা তুলে এনেছে গ্লিটজ।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2017, 03:30 PM
Updated : 22 April 2017, 05:27 PM

গানের কেরিয়ারে লাকী আখান্দ-এর সঙ্গে মাত্র একটি গান করলেও তার পরামর্শের কথা এখনও মনে রেখেছেন কন্ঠশিল্পী আসিফ আকবর।

বলেন, “তিনি (লাকী আখান্দ) আমাকে গান গাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, যখন কোন গান গাইবে তখন একটি গান গাইবে, আর সেই গানের প্রতি মনোযোগ দিবে। তাহলে গানটি ভালো হবে। যদি এক সঙ্গে চার-পাঁচটি গান গাও তাহলে কোনো গানই ভালো হবে না। আমি তার সঙ্গে ‘আকাশের চাদ যদি জমিনের ফুল’ এই একটি গানেই কাজ করেছিলাম।”

ব্যক্তিজীবনে কখনো লাকী আখান্দের সঙ্গে কাজ না করলেও লাকী আখন্দের কাজ সময়কে ছাপিয়ে গিয়েছে বলেই বিশ্বাস করেন সংগীত পরিচালক ইমন সাহা।

বলেন, “তার গান দিয়ে বাংলা গানে একটা নতুন ধারা তৈরি হয়েছিলো। আমি একটি উদাহরন টেনেই বলি, সম্প্রতি আমি তার ‘ঘুড্ডি’ সিনেমার ‘ঘুম ঘুম ঘুম’ গানটি শুনছিলাম। গানটি গেয়েছিলেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। আমি এর আগে কখনো এই গানটি শুনি নাই। গানটি শোনার পরে আমি খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ সেই সময়ে এত আধুনিক কম্পোজিশন, কর্ড স্ট্রাকচার ও মেলেডিকে প্রাধান্য দিয়ে সমসামায়িক সুরে কাজ ভাবাই যায় না। গানটি শুনলে মনে হবে না এই গানটি দুই যুগের বেশি সময় আগে করা। আসলে তিনি সময়কে, যুগকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “অনেকেই গানের অনেকে কম্পোজিশন করেন। কিন্তু সেগুলো গ্রহণযোগ্যতা পায় না। কিন্ত লাকী আখন্দের কাজ সবসময়ে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। খুব কম কম্পোজার ও গায়ক আছেন যিনি তার জীবনে এত ভালো ভালো কালজয়ী গান উপহার দিতে পেরেছেন। আমাদের উচিত তার কাজ নিয়ে গবেষণা করা।”

অন্যদিকে লাকী আখান্দ-এর সঙ্গে কাজের স্বপ্ন দেখলেও সেই স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেলো। এমনটাই কিছুটা মন খারাপের সুরে বললেন নতুন প্রজন্মের গায়ক মিনার রহমান।

বলেন, “লাকী আখান্দ-এর সঙ্গে আমার কাজ করার সৌভাগ্য কখনো হয়নি। কিন্তু আমি তার কনর্সাট দেখেছি। তিনি কির্বোড বাজিয়ে গান করতেন। আমিও কির্বোড বাজিয়ে গান করি। যা ছিলো আমার জন্য বিশাল অনুপ্রেরণার জায়গা।”

তিনি আরও বলেন, “আমার একটা স্বপ্ন ছিলো যদি কখনো তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেতাম। কিন্তু তা কখনো হয়ে উঠেনি। তার গাওয়া অসংখ্য গান রয়েছে যেগুলো আমাকে গান কম্পোজিশন করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। তার কাজগুলো থেকে আমি অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি। তার কন্ঠে গাওয়া ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’, ‘আগে যদি জানতাম’, ‘নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’- এই গানগুলো আমার খুবই পছন্দের । বলতে গেলে লাকী আখান্দ-এর গানগুলো আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত।”