আজান বিতর্কে মাথা কামালেন সনু

টুইটারে আজানকে ‘গুন্ডামি’ বলার পর থেকেই ভারতের মুসলিমদের তোপের মুখে পড়েছেন গায়ক সনু নিগম। এবার ভারতীয় সংখ্যালঘুদের সংগঠন থেকে সনুর মাথা কামিয়ে দিলে দশ লাখ রুপি পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পর ‘দিওয়ানা’খ্যাত এই গায়ক নিজেই নিজের মাথা কামিয়ে ফেলেছেন!

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 01:03 PM
Updated : 19 April 2017, 01:03 PM

সনু’র টুইটের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের ইউনাইটেড মাইনরিটি কাউন্সিলের সভাপতি সৈয়দ শাহ আতেফ আলি আল কাদেরি বুধবার সকালে কোনো ব্যক্তি তার মাথা কামিয়ে ফেলতে পারলে তাকে দশ লাখ রুপি পুরস্কারের ঘোষণা দেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, ওই ঘোষণার প্রতিবাদেই নিজের মাথা কামিয়ে ফেলছেন তিনি।

সনু সাংবাদিকদের বলেন, “আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই মাথা কামিয়ে ফেলবো। এটা কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, এটা অনুরোধ। এই দেশে আপনারা কী করছেন এসব? আমি একজন আস্তিক, কিন্তু আমার ধর্মই সেরা- এটা আমি দাবি করিনা, তবে আপনার ধর্মও সেরা নয়। আমি এসবে বিশ্বাস করি না। আপনাকে মৌলবাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করতেই হবে। চুপ করে থাকা চলবে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমি আলিমকে (সনু’র হেয়ারড্রেসার) আসতে বলেছি, সে আমার মাথা কামিয়ে দেবে। তবে এটি কোনো অস্থিরতা প্রকাশ কিংবা চ্যালেঞ্জের জবাব দেওয়ার জন্য নয়। যে আমার চুল কাটবে, সে একজন মুসলিম আর আমি একজন হিন্দু। এখানে কোনো শত্রুতা নেই। যে ভাষায় ফতোয়া দেওয়া যায়, সেই ভাষাতেই ভালোবাসাও প্রকাশ করা যায়। ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার মানে একে অন্যের সমস্যার কথা বুঝতে পারা এবং ‘আমিই ঠিক’ বলে বড়াই না করা।”

নিজের টুইটের স্বপক্ষেও এসময় যুক্তি দেখান সনু।

তিনি বলেন, “সবারই মত প্রকাশের অধিকার আছে এবং আমি কেবল লাউডস্পিকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি একটি সামাজিক সমস্যার কথা বলেছি, ধর্মের সমস্যার কথা বলিনি। আমি এই কথা মসজিদ, মন্দির এবং গুরুদুয়ারা নিয়ে বলেছি। এটা বুঝতে পারাটা এত কঠিন হবে কেন?”

ধর্মের বিষয়ে নিজের বক্তব্য পরিস্কার করতে সনু বলেন,“আমি খুবই ধর্ম নিরপেক্ষ। আমি ডানপন্থিও নই, বামপন্থিও নই, আমি মধ্যমপন্থায় বিশ্বাসী। আমি কেবল একটি সামাজিক সমস্যা তুলে ধরেছি, ধর্ম নিয়ে কথা বলিনি। যখন কোনো ধর্মীয় স্থানে লাউডস্পিকার লাগানো হয়, তখন জোর করে ঘোষণা দেওয়া হয়, ‘এই ধর্ম আমাদের’। আমি তাদের ব্যাপারেও একই আপত্তি তুলবো, যারা ধর্মের নামে মাতাল অবস্থায় মিছিল করে রাস্তা আটকে দেয়। আমি এটারও বিপক্ষে।”

এর আগে সোমবার ভোরে ধারাবাহিক কয়েকটি টুইটে আজানের শব্দকে ‘গুন্ডাগিরি’ হিসেবে অভিহিত করেন সনু নিগম। ওই টুইটের পরপরই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে এই তারকাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।