সোমবার ভোরে আজানের শব্দে ঘুম ভাঙার পর সনু নিগম লিখেছেন, “ঈশ্বর সবাইকে আশীর্বাদ করুন। আমি মুসলিম না, এবং আজ ভোরে আজানের শব্দে আমার ঘুম ভেঙেছে। ভারতে কবে এই জোর করে চাপানো ধর্মাচার বন্ধ হবে?”
এরপরের পোস্টে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)-এর সময়কার কথা উল্লেখ করে সনু আরও লিখেন, “মুহাম্মাদ-এর সময় বিদ্যুত আবিষ্কার হয়নি, যখন তিনি ইসলামের প্রচার করেছিলেন। কিন্তু এডিসনের আবিষ্কারের পর আমাকে কেন এই কর্কশ আওয়াজ সহ্য করতে হবে?”
পরের পোস্টে তিনি লিখেন,“আমার মনে হয়না কোনো মন্দির অথবা গুরু দুয়ারাতে বিদ্যুতের ব্যবহার করে অন্য ধর্মের লোকদের এভাবে জাগানো হয়। এখানে তাহলে এটা হবে কেন? এটা শুধুই গুন্ডাগিরি...”
নব্বইয়ের দশকে ‘ইয়ে দিল দিওয়ানা’, ‘সন্দেসে আতে হ্যায়’-এর মতো জনপ্রিয় বলিউডি সিনেমার গান দিয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠা সনু নিগম-এর আজান নিয়ে এমন বক্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন অনেকেই।
দিলওয়ার হোসেন নামের একজন টুইটারে লিখেছেন, “সনু নিগম স্যার, আমি আপনার একজন ভক্ত। কিন্তু আপনার জানা উচিৎ ছিল যে ভারত একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ এবং এবং এখানে একসঙ্গে অনেক ধর্মের বাস। সুতরাং ধর্মের ব্যাপারে এখানে আপত্তিকর কিছু না বলাটাই শ্রেয়।”
অনামিকা নামের একজন লিখেছেন, “ভারতে আজান বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ যেখানে লাখো মুসলিমের বসবাস! কারণ দেশের আদরের ছেলে সনু নিগম আজানের শব্দে ঘুমাতে পারেন না! সহনশীলতা কোথায় গেল?”
নাযিশ জেব নামের আরেকজন লিখেছেন, “সনু নিগম, আপনাকে কে জোর করেছে? কানে তুলা গুঁজে ঘুমান। যত্তোসব ফালতু কথা!”
তীব্র সমালোচনার মুখে থাকা সনু নিগমের পক্ষেও কথা বলতে শোনা যাচ্ছে অনেককে।
রতনেশ মিশ্র নামের এক অনাবাসী ভারতীয় লিখেছেন, “দশ বছর ধরে এটা আমি সহ্য করেছি, যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগ পর্যন্ত। এটা এক অত্যাচার যেটা ভারতের সবাইকে ভোগ করতে হচ্ছে। আপনি আওয়াজ তুলবেন এর বিপক্ষে, আর ওরা দেবে ফতোয়া।”
এদিকে সনু’র এই বক্তব্য বিভক্ত করে দিয়েছে ভারতের শিল্পী সমাজকেও। সংগীতশিল্পী শান, কৈলাশ খের, নির্মাতা বিবেক অগ্নিহোত্রীর মতো শিল্পীরা সনুকে এব্যাপারে সমর্থন করলেও সোনা মহাপাত্র, বাবা সেহগাল, হার্ড কৌরদের মতো শিল্পীরা মনে করছেন, ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী একটি রাষ্ট্রে সব ধর্মের প্রতিই সম্মান দেখানো উচিৎ।