তরুণ শিল্পীদের গানে প্রাণ নেই : লতা মঙ্গেশকর

নতুন প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের গানে কোনো প্রাণ থাকেনা বলেই তা দ্রুত শ্রোতাদের স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায় বলে মনে করেন উপমহাদেশের সংগীত কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2017, 02:29 PM
Updated : 15 March 2017, 02:29 PM

বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের প্লেব্যাক নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন লতা মঙ্গেশকর। সম্প্রতি আইএএনএসক দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “প্লেব্যাক করতে হলে আমার মতে কণ্ঠ-অভিনয়ও জানতে হয়। তরুণ শিল্পীদের আমি অনুরোধ করবো, গান গাওয়ার আগে চরিত্রকে বুঝুন, পরিবেশ সম্পর্কে জানুন, গানের পেছনের গল্পটা জানুন। আর তখনই কেবল আপনার গান প্রাণ পাবে; যেটা আমার মতে এখনকার গানে একেবারেই অনুপস্থিত।”

ভারতের নাইটিঙ্গল হিসেবে খ্যাত এই শিল্পী আরও বলেন, “একারণেই হয়তো মানুষ এখনও পুরনো দিনের গান শুনতেই ভালবাসে আর নতুন গানগুলো খুব দ্রুত তাদের স্মৃতি থেকে মুছে যায়।”

ভারতের সর্বোচ্চ বেসারমরিক সম্মাননা ভারতরত্ন থেকে শুরু করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড-এর মতো বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন লতা মঙ্গেশকর।

তার মতে এসব পুরস্কার মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধারই প্রতীক।

তিনি বলেন, “পুরস্কারের ট্রফির চেয়ে বেশি মূল্যবান আমার কাছে মানুষের ভালবাসা, যা বছরের পর বছর ধরে আমার গান শুনে আমাকে তারা দিয়ে আসছেন। সুতরাং যতো পুরস্কারই আমি পাই না কেন, আমি সবসময়ই আবেগাপ্লুত হবো।”

পর্দায় তার কণ্ঠে ঠোঁট মিলিয়েছেন মধুবালা, নার্গিস, মীনা কুমারীদের মতো বিগত দিনের অভিনেত্রীরা। পরবর্তী প্রজন্মের অভিনেত্রীর মধ্যে মাধুরী দিক্ষীত ও কাজল তার গানের প্রতি ন্যায় বিচার করতে পেরেছেন বলে মনে করেন তিনি।

তবে লতা মঙ্গেশকরের মতে তার গানকে পর্দায় সবচেয়ে ভালভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন জয়া বচ্চন।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমি যখন তার জন্য গানের রেকর্ডিং করতাম, তিনি পাশে বসে বসে আমাকে লক্ষ্য করতেন। তার উপস্থিতি নিয়ে আমি তটস্থ হয়ে উঠতাম। তো আমি একদিন ঋষিকেশ মুখার্জীকে জিজ্ঞেস করলাম এর কারণ। তিনি বললেন, এতে করে চরিত্রটি তার বুঝতে সুবিধা হয়।”

“পরে যখন আমি সিনেমা দেখলাম, আমি হতবুদ্ধি হয়ে গিয়েছিলাম তাকে আমারই মতো লালপেড়ে সাদা শাড়ি এবং কপালে লাল টিপ পরতে দেখে। আমাকে বলতেই হচ্ছে, তিনি খুবই ভাল একজন অভিনেত্রী। আমার গানগুলোকে পর্দায় ‍তুলে আনার ব্যাপারে তার জুড়ি ছিল না,” যোগ করেন তিনি।

হিন্দি ছাড়াও ভারতীয় আরও অনেক ভাষায় গানের অভিজ্ঞতা রয়েছে লতা মঙ্গেশকর-এর; তবে বাংলা গানের প্রতি তার রয়েছে আলাদা এক ভালবাসা।

“যদিও আমি ২৬ টি ভাষায় গান গেয়েছি, তবে হিন্দির পর আমি সবচেয়ে বেশি গেয়েছি বাংলা গান। সলিল চৌধুরী, সতীনাথ মুখপাধ্যায়, বাপ্পি লাহিড়ীদের মতো সুরকারদের সঙ্গে কাজ করেছি আমি। যেহেতু বাংলা এবং মারাঠি ভাষার মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে, আমি সবসময় একে নিজের ভাষা মনে করেছি,” বলেন তিনি।

৮৭ বছর বয়সী এই শিল্পী খেতে এবং খাওয়াতে খুব পছন্দ করলেও বয়সের কারণে অনেক পছন্দের খাবারই তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়েছে তাকে। তবে নাতি নাতনিদের জন্য এখনও মাটন পসন্দ রান্না করতে ভালবাসেন তিনি।