ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ইরানের জয়

শেষ হলো রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত পঞ্চদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৭। সেরা চলচ্চিত্র, সেরা নির্মাতা এবং সেরা অভিনেতা ও সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র- এই চারটি বিভাগের পুরস্কার জিতে এবারের উৎসবের আসর মাত করেছেন ইরানের শিল্পীরা।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2017, 09:45 AM
Updated : 21 Jan 2017, 10:42 AM

সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ইরানী নির্মাতা রেজা মিরকারিমের ‘ডটার’। 

সেরা নির্মাতা পারভেজ সাহবাজি, তার ‘মারালিয়া’ চলচ্চিত্রের এই পুরস্কার পান তিনি। সেরা অভিনেতার পুরস্কার জেতেন ফরহাদ আসলানি। সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আলি মারদোমির ‘দ্য সেমেন্টারি ম্যান’।

সেরা অভিনেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফিলিস্তিনের অভিনেত্রী মাইসা আব্দ এলহাদী।

উৎসবে ৬৭ দেশের ১৮৮টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ৭টি বিভাগে মোট ২৫টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর মধ্যে চারটি পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশের নির্মাতারা। উৎসবে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে তৌকির আহমেদ পরিচালিত অজ্ঞাতনামা-কে।

সেরা শিশুতোষ চলচ্চিত্র হিসেবে বাদল রহমান পুরস্কার পেয়েছে ফিলিপাইনের মারসেই সি কারিগার ‘পিটং কাবাং পালাই’।

দর্শকদের বিচারে সেরা চলচ্চিত্র ভারতের ববি সারমা বারুহের ‘সোনার বরণ পাখি’।

সেরা ফিচার চলচ্চিত্র আজারবাইজানের মিরবালা সালিমলির ‘কিরমিজি বাগ’। এই বিভাগে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের নাদের চৌধুরীর ‘লালচর’।

সেরা প্রামাণ্যচিত্র নেদারল্যান্ডসের অ্যানি ক্রিস্টেন তিরারডটের ‘আইল্যান্ডস অফ দ্য মঙ্কস’। এই বিভাগের বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে ইতালির মার্কো জুইনের ‘লা সেদিয়া দে কার্তুনে’।

স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র বিভাগে সেরা নির্বাচিত হয়েছে সিরিয়ান পরিচালক আমির আল বারযাইয়ের ‘ইয়ামান’।

ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে দুটি চলচ্চিত্রকে-সিভাপ্রাদ কে.ভি পরিচালিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘আপ্পোপানথাডি’ এবং বাংলাদেশের তারেক আজিজ পরিচালিত ‘প্যারালাল জার্নি’।

নারী চলচ্চিত্রকার বিভাগে সেরা প্রামান্যচিত্র নির্বাচিত হয়েছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধশিশুদের ওপর নির্মিত প্রামান্যচি ‘জন্মসাথী’। এটি পরিচালনা করেছেন শবনম ফেরদৌসী।

 শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সমাপনী বক্তব্যে, বাংলা চলচ্চিত্রের বিশ্বায়নে জোর দেন মন্ত্রী। নিজের ইতিহাস ঐতিহ্যকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার আহবান জানান তিনি।

১২ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন বাংলাদেশসহ প্রায় ৭০টি দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

উৎসবের আংশ হিসেবে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর যৌথভাবে আয়োজন করে ‘সপ্তম ঢাকা সিনে ওয়ার্কশপ’। ১৬ দিনের এই ওয়ার্কশপে বাংলাদেশসহ ৮টি দেশের ২৭ জন তরুণ নির্মাতারা অংশ নেন।

এছাড়া গত ১৩-১৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগিতায় নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী এবং বিশিষ্ট নারী ব্যক্তিত্বর অংশগ্রহণে রাজধানীর আঁলিয়স ফ্রঁয়েসেসর আর্ট গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত হয় ‘চলচ্চিতে নারী’ শীর্ষক তৃতীয় ঢাকা আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

উৎসবের আংশ হিসেবে ১৫ জানুয়ারি দিনব্যাপি ‘বাংলা সিনেমার বিশ্ব যাত্রা’ নিয়েও অঁলিয়স ফ্রঁসেজে প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন। সামিয়া জামানের সঞ্চালনায় সেখানে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালকদের পথ দেখান বিদেশী নির্মাতা ও প্রযোজকরা। আইইএফটিএর সভাপতি মার্কোওরসিনি, অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে ঘোষণা দেন, এবারের কান চলচ্চিত্র উৎসবের কর্মশালায় তিনজন তরুণ নির্মাতাকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবেন।

উৎসবের অংশ হিসেবে এবারই প্রধামবারের মতো একটি চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ ও শিল্পাঙ্গন আর্ট গ্যালারি যৌথ আয়োজনে ৮ জানুয়ারি থেকে এই প্রদর্শনি শুরু হয়ে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। ইরানি তরুণ চিত্র শিল্পী সারাহ হোজ্জাতির ৩০টি চিত্রকর্ম নিয়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনীর নাম ছিল ‘মাই ড্রিম ওয়ার্ল্ড’।