সিনেমা মুক্তির এই সময়টাই আমার জন্য উপযুক্ত সময়: আসিফ নূর

শুক্রবার সারাদেশে মুক্তি পেয়েছে এস এ হক অলিকের ‘এক পৃথিবী প্রেম’ সিনেমাটি। এই সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষিক্ত হলো নবাগত অভিনেতা আসিফ নূর। ক্যারিয়্যারের প্রথম সিনেমার প্রচারনার শত ব্যস্ততার মাঝেও বৃহস্পতিবার রাতে গ্লিটজের সঙ্গে এক আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন তিনি।

তানজিল আহমেদ জনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2016, 01:36 PM
Updated : 23 Dec 2016, 01:36 PM

গ্লিটজ: ‘এক পৃথিবী প্রেম’ সিনেমার মাধ্যমে আপনি ঢাকাই সিনেমাপ্রেমীদের জন্য কী বার্তা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন?

আসিফ নূর: আসলে সিনেমার নামটা শুনলেই মনে হয় এখানে বুঝি একজন ছেলে-মেয়ের প্রেম রয়েছে। কিন্তু আসলেই বিষয়টা মোটেও তেমনটি হয়। যদিও এখানে একজন ছেলে ও মেয়ের মধ্যকার প্রেম রয়েছে সত্যি কিন্তু তার পাশাপাশি বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের প্রেম, ব্যক্তিজীবনে যে কোন প্রিয়জনের সঙ্গে প্রেমের বিষয়টিই এখানে উঠে এসেছে। আর এই প্রেমের মধ্যে কী বার্তা রয়েছে তা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখলেই খুব সহজে বোঝা যাবে।

গ্লিটজ: সিনেমাটি মুক্তির দিনক্ষন এর আগে দুইদফা নির্ধারিত হলেও অবশেষে শুক্রবার সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। এই বিষয়টি আপনার ক্যারিয়্যারে কতটুকু নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?

আসিফ নূর:
 কোন ধরনের নেতিবাচক প্রভাবই ফেলবে না। কেননা আমাদের সিনেমার মুক্তির তারিখ বদলের পেছনে দুইবারই যৌক্তিক কারন ছিলো। প্রথমবার আমরা যখন সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার দিনক্ষণ নির্ধারন করলাম সেই সময় দেশের উত্তরাঞ্চলে বেশ কিছু এলাকা বন্যায় প্ল্যাবিত ছিলো এবং একই সঙ্গে সেই সময় দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতাও কিছুটা ছিলো। পরবর্তীতে যখন আবারোও মুক্তির সিদ্ধান্ত নিলাম তখন আয়নাবাজি বেশ ভালো ব্যবসা করছিলো। তাই আমাদের সিনেমা শিল্পের স্বার্থে তখন আমাদের সিনেমাটি মুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। কারন আমরা সবাই চাই আমাদের সিনেমা শিল্পে আবারো সুদিন ফিরে আসুক, আবারো ঘুরে দাঁড়াক।

কিন্তু এখন আমরা যেই দিনটাকে বেছে নিয়েছি তা খুবই ভালো একটি দিন। কারন সামনে বড় দিনের ছুটি এবং ইতমধ্যে বিভিন্ন স্কুলের ছুটিও শুরু হয়ে গিয়েছে। মাত্র কয়েকদিন পরেই নতুন বছর শুরু হতে যাচ্ছে সবকিছু মিলিয়ে এই সময়ে একটা ছুটির আবহ রয়েছে। সেই দিক থেকে আমি তো এখানে কোন ধরনের নেতিবাচক কিছুই দেখছি না বরং আমি মনে করি সিনেমা মুক্তির এই সময়টাই আমার জন্য উপযুক্ত সময়। 

গ্লিটজ: সিনেমার দৃশ্যধারনের সময়ে আইরিনের সঙ্গে কাজের রসায়ন কেমন ছিলো?

আসিফ নূর: আমি সর্ম্পূণ একটি ভিন্ন পরিবেশ থেকে সিনেমায় কাজ করতে এসেছি। সবসময় আমি মেয়েদের থেকে নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখতাম। কিন্তু আমি যখন সিনেমায় কাজ শুরু করলাম তখন আমাদের সিনেমার দৃশ্যধারনের আগে অলিক ভাই কিছুদিন আইরিন ও আমাকে গ্রুমিং করিয়েছিলেন।

তাই আমাদের মধ্যে একটা কমর্ফোট জোন তৈরি হয়ে যাওয়ার ফলে খুব অল্প সময়েই আমাদের মধ্যে খুব ভালো একটা বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। সেই বন্ধুত্বটাই সিনেমার দৃশ্যধারনের সময় আমাদের উপকারে এসেছিলো আর কাজের ক্ষেত্রে রসায়নটাও জমে উঠেছিলো। অন্যদিকে যেহেতু আমার আগেও আইরিন সিনেমায় কাজ করেছিলো তাই যে কোন দৃশ্য আমি যদি একটু ঘাবড়ে গেলেও সেই সময় আইরিন আমাকে বেশ সহযোগিতা করতো। একজন সহশিল্পী হিসেবে তার (আইরিন)তুলনা হয় না।

গ্লিটজ:
 সিনেমার কোন রোমান্টিক দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে অতীত জীবনের কোন স্মৃতি কি মনে পড়ে ছিলো?

আসিফ নূর: এমন কিছুই আমার হয়নি। আমি সবসময় মেয়েদের প্রতি একটু আনকমর্ফোটেবল ছিলাম। কোনো মেয়ের প্রতি ক্র্যাশ খাওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। যেহেতু জীবনে এমন কোন ঘটনা কোন সময়েই ছিলো না তাই অতীত জীবনের কোন স্মৃতির কথা মনে হয়নি।

গ্লিটজ: সিনেমার দৃশ্যধারনের সময়কার একটি মজার গল্প শুনতে চাই..

আসিফ নূর: ‘অনেক ভেবে একটি কথাই বলে আমার মন’ গানটিতে একটি দৃশ্য রয়েছে যেখানে নায়িকা এসে নায়ককে জড়িয়ে ধরে তার সারা মুখে চুম্বন দিবে। এই দৃশ্যটি ছিলো সিনেমার দৃশ্যধারনের প্রথম দিনের প্রথম দৃশ্য। তখন দৃশ্যধারনের সময় অনেক অগ্রজ পরিচালকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাদের সামনে আমি এই দৃশ্যটি করতে গিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক অবশেষে দৃশ্যটা শেষ হলো। তবে এই দৃশ্যে সময় আইরিন আমাকে ২২বার চুম্বন করেছিলো। এমনটাই আইরিন আমাকে সহ সব জায়গায় বলে থাকে। তবে এটা ঠিক আমাদের পুরো সিনেমার দৃশ্যধারনের জার্নিটা খুবই মজার ছিলো।

গ্লিটজ: ঢাকাই সিনেমার দর্শকরা একজন নতুন নায়ককে প্রেক্ষাগৃহে কেন দেখতে যাবেন?

আসিফ নূর: আমাদের দেশের সব দর্শকরা সমসময় এই কথাটিই বলে একজন নতুন নায়কের সিনেমা কেন দেখতে যাবেন? আসলে এই বিষয়টি খুবই দুঃখজনক একটি ব্যাপার। কারন সিনেমা শিল্পে নতুন ছেলে-মেয়ে কাজ করতে আসার বিষয়টি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। পৃথিবীর যে কোন দেশের সুপারস্টার জীবনের শুরুতে নতুন ছিলো। তবে আমি এক্ষেত্রে বলতে চাই দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে আমাকে দেখতে নয় বরং তারা একটি সুন্দর গল্পের সিনেমা দেখতে আসবেন। যারা তার বাবা-মাকে ভালোবাসেন, পরিবার ও কাছের মানুষকে ভালোবাসেন, তারা চমৎকার এই পারিবারিক গল্পের সিনেমাটি দেখতে আসবেন। আর এই সিনেমাটি দেখতে গিয়ে কেন্দ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করা আবিদ হাসানকে (আসিফ নূর)নিজের অজান্তেই দর্শকদের ভালো লেগে যাবে।

গ্লিটজ: সিনেমাটি ফ্লপ হলে কি ঢালিউডকে চির বিদায় জানাবেন?

আসিফ নূর: আমি সিনেমাশিল্পে নিয়মিত কাজ করতে চাই। আমি খুব অল্প সময়েই এই সিনেমাশিল্পকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি এখানে কোন বিশেষ স্বার্থ আদায়ের জন্য আসি নাই। আমার এই সিনেমার গ্রহনযোগ্যতা যেমনই হোক আমি এই সিনেমাশিল্প থেকে চলে যাবো না। আমি এখানে ভালো গল্পের সিনেমায় ভালো ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে কাজ করতে চাই।