নিবিড় পর্যবেক্ষণে লাকী আখন্দ

ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2016, 01:56 PM
Updated : 18 July 2016, 01:56 PM

সোমবার সন্ধ্যায় সংগীতশিল্পীর মেয়ে মাম্মিন্তি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেমোথেরাপির পর তার শরীরের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। পিঠ ও কোমরের ব্যথা আছে এখনও।”

ক্যান্সার আক্রান্ত শিল্পী লাকী আখন্দ হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাজধানীর বারডেমের হাসপাতাল থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

মাম্মিন্তি জানান, লাকী আখন্দের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত ‘এমনটি বলা যাবে না’। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাজ্জাদের অধীনে ভর্তি আছেন।

“ব্যাকপেইন আছে, তবে আব্বু কিন্তু সবার সঙ্গে কথা বলছেন। খাবার খাচ্ছেন। মনে হচ্ছে, ধকল কাটিয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে।”

লাকী আখন্দের শারীরিক অবস্থা জানতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের যোগাযোগ ও বাণিজ্য বিভাগের প্রধান ডা. সেগুফা আনোয়ারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়।

লাকী আখন্দ ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কি না, তা ‘জানেন না’, বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।

শিল্পীর মেয়ে মাম্মিন্তি জানান, লাকী আখন্দকে আর্থিক সহায়তা পাঠাতে চাইলে তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে পাঠানো যাবে।

                        লাকী আখন্দের ব্যাংক হিসাবের নম্বরগুলো হচ্ছে:

                        ডাচ বাংলা ব্যাংক : ১৬২.১০১.১৩৭৩৫৯

                        উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড : এস বি ১৪৭৬

                        ব্যাংকক ব্যাংক, থাইল্যান্ড : ১১৩.৪.৯১৮৬৮.৭

কেউ যেন বেনামে ব্যাংক হিসাব খুলে ‘ফান্ড রাইজিং’ কার্যক্রম না চালায় সে অনুরোধও জানিয়েছেন আশির দশকের তুমুল জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পীর মেয়ে।

তিনি বলেন, “লাকী আখন্দকে কেন হাত পাততে হবে- এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। আব্বুকে কেন হাত পাততে হবে? সংগীতের জন্য আজীবন নিবেদিতপ্রাণ মানুষটি তো এখন সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইতে পারেন, সে অধিকার তার আছে।

“চিকিৎসার জন্য কেউ অর্থ সাহায্য দিতে চাইলে তিনি স্বেচ্ছায় দেবেন। কাউকে দিতেই হবে, এমন কথা নেই। আব্বু কোনোদিন কারও কাছে হাত পাতবেন, এ অসম্ভব। তিনি এমন মানুষ নন।”

গত বছর গুরুতর অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন লাকী আখন্দ। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়েছে।

এরপর ঢাকা থেকে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চি‌কিৎসায় পাঁচ লাখ টাকা অর্থ সহায়তাও দেন।

লাকী আখন্দ একাধারে সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার এবং গীতিকারও।

১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে বের হয় তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘লাকী আখন্দ’।

ওই অ্যালবামের বেশ কয়েকটি গান ব্যাপক সাড়া ফেললেও ১৯৮৭ সালে ছোট ভাই হ্যাপী আখন্দের মৃত্যুর পরপর সঙ্গীতাঙ্গন থেকে অনেকটা স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান নেন এই গুণী শিল্পী।

মাঝখানে প্রায় এক দশক নীরব থেকে লাকী আখন্দ ১৯৯৮-এ ‘পরিচয় কবে হবে’ ও ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ অ্যালবাম দুটি নিয়ে আবারও ফিরে আসেন শ্রোতাদের মাঝে।

এরপর টেলিভিশনের লাইভ প্রোগ্রামে তাকে দেখা গেছে; মেয়ে মাম্মিন্তিকেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার উত্তরসূরী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন দর্শকদের সঙ্গে।