তুরস্কে ‘নিরাপদে আছেন’ মিমি

তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনার মধ্যে আটকে পড়েছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। সেখানে তার সঙ্গে আরও আছেন অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত, সৌরভ দাস এবং পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2016, 10:51 AM
Updated : 17 July 2016, 10:51 AM

বিরসার পরবর্তী ছবির শুটিংয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গিয়েছিলেন টালিগঞ্জের এই অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। একই ছবির জন্য তুরস্কে গিয়ে আটকে পড়েছেন রাজ্যের যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে তারা সবাই সুস্থ ও নিরাপদে আছেন বলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানিয়েছেন নিজেরাই।

মিমি নিজের ভক্তদের শঙ্কামুক্ত করতে এরমধ্যেই একটি ছবি পোস্ট করেছেন ইন্সটাগ্রামে। সিনেমার কলাকুশলীদের সঙ্গে খেতে বসার ছবির ক্যাপশনে মিমি লিখেন, “আমরা সবাই নিরাপদে আছি, সুতরাং দয়া করে কেউ ভয় পাবেন না। আর হ্যাঁ, ছবির কাজ শেষ না করে ফিরছি না।”

ছবিটির প্রযোজনা সংস্থা ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের পক্ষ থেকে জানা গেছে, এখন সুরক্ষিত আছেন বিরসা সহ ছবির কলাকুশলীরা। তবে শুটিংয়ের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ। আপাতত শহরের একটি হোটেলে রয়েছে পুরো টিম। শুটিং টিমের সঙ্গে প্রায় ৩৫ জন বাঙালি এবং ৪০-৪৫ জন স্থানীয় লোক আছেন।

ইস্তাম্বুল থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বিরসা বললেন, “আমরা সবাই ভাল আছি। গতকাল যখন শুটিং করছিলাম তখন ঘটনাটি ঘটে। তবে এটা তো জঙ্গি হানা নয়, সেনার সঙ্গে সরকারের লড়াই। জঙ্গি হানা হলে আরও ভয়ের হত। সারারাত রাস্তায় সাধারণ মানুষ নেমেছিলেন। তারা বলছিলেন, উই ওয়ান্ট ডেমোক্র্যাসি। তবে এখন সব নর্মাল। সকলে নিজের কাজে যাচ্ছেন। আজ আরও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। কারণ তারা মনে করছেন এটা সাধারণ মানুষের জয়।”

বিরসা আরও জানান, ছবির ইউনিটের সবাই নিরাপদে আছেন। শুক্রবার রাতে তুর্কি এবং ভারতীয় ক্রু একসঙ্গেই ছিলেন। ভোর ৫টা নাগাদ ঘুমাতে গেছেন তারা। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে শুটিং শুরু হওয়ার কথা। তবে তার আগে বেলা ১০টায় সবাই মিলে একটি মিটিংয়ে বসবেন। তখনই পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অভিনেতা যশ টুইট করেন, “চিন্তার কোনো কারন নেই। আমরা তুরস্কের মানুষের সাথে আছি, তারাও আমাদের সাথে আছেন। উই আর রেডি টু রক!”

এদিকে খবর পেয়ে তাদের দেশে ফেরানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে রাজ্যের সচিবালয় থেকে।

অবশ্য তুরস্কে অবস্থিত ভারতীয়দের এ ঘটনার পরপরই সতর্ক করে দেয়া হয়। রাস্তা বা জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা। বাড়ির বাইরে না আসার কথাও জানিয়েছেন তারা। যোগাযোগের জন্য আপদকালীন ফোন নম্বরও দেয়া হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেছেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয়দের বাড়ির ভেতরেই থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।”

শুক্রবার রাতে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশ অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে। কিন্তু সামরিক বাহিনীর সব অংশ সাড়া না দেওয়ায় ও সরকারি নেতৃবৃন্দের তড়িৎ পদক্ষেপে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

এ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় ২৬৫ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম জানিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৬১ জন সরকারি বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাকি ১০৪ জন অভ্যুত্থানের চেষ্টাকারী সেনা সদস্য বলে ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান  উমিত দানদার জানিয়েছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দানদারকে তুরস্কের সেনা প্রধানের দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচজন জেনারেল ও ২৯ জন কর্নেলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে দুই হাজার ৭৪৫ জন বিচারককে।