মুক্তির আগে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ‘আইসক্রিম’ ঝড় তুলতে সক্ষম হলেও হলফেরত দর্শকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়াই জুটেছে সিনেমাটির ভাগ্যে । ফলে, রাজধানীর বলাকা আর শ্যামলী সিনেমা হলে ভাল ব্যাবসা করলেও স্টার সিনেপ্লেক্স, অভিসার, রাজমনীর মতো হলগুলোতে মুখ থুবড়ে পড়েছে সিনেমাটি।
অভিসার সিনেমা হলে ‘আইসক্রিম’ হয়েছে ‘সুপার ফ্লপ’, সাফ জানিয়ে দিলেন সিনেমা হলের ব্যাপবস্থাপক নাসির।
গ্লিটজকে তিনি বললেন, “‘আইসক্রিম’ দেখিয়ে তো আমরা মারা পড়েছি। ‘আইসক্রিম’ সুপার ফ্লপ। এই সিনেমা একেবারেই চলেনি। আমরা ঘরে কোনো টাকা তুলতে পারিনি, পুরোটাই লোকসান।”
এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন সিনেমার গল্পের দুর্বোধ্যতাকে।
“আমাদের প্রেক্ষাগৃহে যারা নিয়মিত দর্শক তারা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির। এই সিনেমা তারা কোনভাবেই বুঝে উঠতে পারেনি।সিনেমাটির গল্প বলার ঢঙ্গে অনেক ঝামেলাও আছে। সিনেমার নায়ক-নায়িকারাও একেবারে নতুন। তাদের অভিনয়েও ঝামেলা আছে বলে বেশিরভাগ দর্শক মন্তব্য করেছেন।”
একই সুর রাজধানীর রাজমনি সিনেমা হলের ব্যাবস্থাপকের কণ্ঠেও।
গ্লিটজকে তিনি বলেন, “দর্শক আনতে ব্যার্থ হয়েছে ‘আইসক্রিম’ । আমাদের মতো প্রেক্ষাগৃহগুলোতে সাধারণত পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক সিনেমার টিকেট বিক্রি ভালো হয়। কারণ আমাদের মতো হলগুলোর নিয়মিত দর্শকই ঢাকাই বাণিজ্যিক সিনেমার মূল দর্শক। আর ‘আইসক্রিম’-এর মতো সিনেমাগুলোর প্রদর্শনের উপযুক্ত প্রেক্ষাগৃহ হলো সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টার। সেখানে এই ধরনের গল্পের সিনেমা দেখার ভালো দর্শক রয়েছে।”
তবে বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সেও সিনেমাটির ব্যাবসা খুব একটা ভাল নয় বলেই জানালেন প্রেক্ষাগৃহটির ব্যাবস্থাপক মেসবাহ-উল-হক।
“ ‘আইসক্রিম’-এর অবস্থা বেশ খারাপ। এমনকী প্রথম দুই দিনেও সিনেমাটি দেখতে দর্শক সমাগম ছিল খুবই কম। মাত্র ত্রিশ শতাংশ দর্শক সমাগম হয়েছে সিনেমাটির জন্য, যা বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রেও খুবই খারাপ বলতে হবে।”
ওদিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে রেদওয়ার রনির ‘আইসক্রিম’ সিনেমার মতো এমন ধরণের গল্পের আরো বেশি সিনেমা নির্মাণ হওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজধানীর বলাকা সিনেমা হলের ব্যাবস্থাপক।
গ্লিটজকে তিনি বললেন, “‘আইসক্রিম’ সিনেমার টিকেট বিক্রি খুবই ভালো যাচ্ছে। কারণ, এখনকার তরুণ দর্শকরা যেমন সিনেমা দেখতে চায় ‘আইসক্রিম’ ঠিক তেমনই গল্পের সিনেমা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রেক্ষাগৃহে যারা নিয়মিত সিনেমা দেখতে আসেন তাদের সিংহভাগই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। যদিও তিন আনকোরা ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ‘আইসক্রিম’ সিনেমাটি রেদওয়ান রনি নির্মাণ করেছেন কিন্তু তাদের অভিনয় তরুণ দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। ফলে অনেক দর্শক দ্বিতীয়বার সিনেমা দেখার জন্য তার বন্ধুদের নিয়ে কিংবা প্রিয়জনকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে আসছেন।”
এদিকে, শুক্রবার ও শনিবাবের পরে রবিবার বাড়তি একদিনের ছুটি থাকার কারনে ‘আইসক্রিম’ সিনেমার প্রথম তিন দিন টিকেট বিক্রি মন্দ হয়নি রাজধানীর শ্যামলী সিনেপ্লেক্সে।
গ্লিটজকে এব্যাপারে সিনেমাহলটির ব্যাবস্থাপক বলেন, “এটা ঠিক যে, শুক্রবার ও শনিবারের পরে রবিবারে পহেলা মে’র ছুটি থাকায় সিনেমার টিকেট বিক্রি ভালোই হয়েছে। কারন বন্ধের দিনে সাধারণত আমাদের টিকেট বিক্রি ভালো হয়। আর সিনেমার গল্পতো এখনকার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে, তাই এই সিনেমার দর্শকদের মধ্যে তরুণরাই বেশি।”
তবে সিনেমাটির আয় ‘আশানুরূপ’ না হওয়ায় দ্বিতয়ি সপ্তাহে সিনেমাটিকে তারা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না।
“রেদওয়ান রনির আগের সিনেমা ‘চোরাবালি’র মতো ‘আইসক্রিম’ সিনেমাটির টিকেট বিক্রি হয়নি। তার একেবারে খারাপও হয়নি। তবে আমরা শুধু এক সপ্তাহ এই সিনেমাটি প্রদর্শন করবো।”