বক্স অফিসে মন্দের ভাল ‘মুসাফির’

২২ এপ্রিল সারা দেশে ৮১টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে আশিকুর রহমানের সিনেমা ‘মুসাফির’। সিনেমাতে আরিফিন শুভের বিপরীতে অভিনয় করেছে নবাগত মারজান জেনিফা। এক সপ্তাহ পর বক্স অফিসে কেমন ঘুরছে সিনেমাটির আয়ের চাকা?

তানজিল আহমেদ জনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2016, 06:48 AM
Updated : 1 May 2016, 06:50 AM

রাজধানীর বেশকয়েকটি প্রতিষ্ঠিত সিনেমা হলের ব্যাবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, লাভের মুখ না দেখলেও, ‘মুসাফির’-এর কারণে লোকসান গুনতে হয়নি তাদের।

এক কোটি ১৮ লাখ বাজেটের সিনেমাটি মুক্তির আগে থেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও ইউটিউবে যথেষ্ট আলোড়ন সৃষ্টি করে। বক্স অফিসে ‘মুসাফির’-এর সঙ্গে প্রতিযোগী হিসেবে ছিল না আর কোন নতুন সিনেমা। সিনেমাটির ব্যবসাসফল হওয়ার অঙ্কটা খালি চোখে সহজই মনে হচ্ছিল। কিন্তু দর্শকদের কাছে খুব একটা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেনি ‘মুসাফির’। তবে চলতি বছরে মুক্তি পাওয়া অন্য সিনেমাগুলোর তুলনায় ব্যাবসা খুব একটা খারাপও হয়নি সিনেমাটির।

রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলের ম্যানেজার রেজাউল করিম গ্লিটজকে বললেন, “মাত্র এক সপ্তাহ ‘মুসাফির’ সিনেমাটি আমরা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করছি। যে কোন সিনেমাতেই হিরো একটা গুরুত্বর্পূণ বিষয়। কারন এখনকার সময়ে দর্শক তার পছন্দের নায়ক বা নায়িকার সিনেমা দেখতেই প্রেক্ষাগৃহে আসেন। এই সিনেমার নায়ক আরেফিন শুভ এখনও দর্শকদের কাছে নতুন। তাই টিকেট বিক্রি কম হওয়ায়, ‘মুসাফির’ আমরা দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রদর্শন করছি না।”  

তিনি আরও বলেন, মন্দার বাজারে আশানুরূপ না হলেও ‘মুসাফির’-এর ব্যাবসা ‘খারাপ হয়নি’।

“যেহেতু ইদানিং এমনিতেই আমাদের বিক্রি খবুই খারাপ যাচ্ছে, সেদিক থেকে বিবেচনা করলে ভালোই হয়েছে ব্যাবসা।” বলেন রেজাউল।

এদিকে 
অভিসার
 সিনেমার হলের ম্যানেজার নাসির জানান, প্রথমে ব্যাবসা ভাল হলেও দ্রুতই আয়ে ভাটা পড়তে থাকে ‘মুসাফির’-এর।

গ্লিটজকে তিনি জানান,“ প্রথম দিন বিক্রি খুবই ভালো হলেও দ্বিতীয় দিনেই এসে তা কিছুটা কমে শুরু করে। নায়ক হিসেবে আরিফিন শুভ এখনো নতুন বলা চলে, তাই দশর্কের আগ্রহ হয়ত কম ছিলো। অনেক আগ্রহ নিয়ে প্রথম দুই দিন প্রেক্ষাগৃহে দর্শক ‘মুসাফির’ দেখতে আসলেও তৃতীয় দিনে এসেই হঠাৎই আমাদের বিক্রি কমা শুরু হয়।”

তবে ব্যাবসায়িক দিক থেকে ‘মুসাফির’কে ‘মন্দের ভাল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রথম চার মাসে তেমন কোন ভালো সিনেমা বাজারে আসেনি যেগুলো দিয়ে আমাদের প্রেক্ষাগৃহের লোকসান কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব। সেই দিক থেকে যদি বিবেচনা করলে, ‘মুসাফির’ সিনেমাটি অন্তত এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের জন্য মন্দের ভালো ছিলো।” 

ঢাকার সেনা অডিটোরিয়াম এর ম্যানেজার মনির হোসেনের মতে, সিনেমায় শাকিব খানের মতো শক্তিশালী নায়ক না থাকায় ব্যাবসা কিছুটা কম হচ্ছে।  

গ্লিটজকে তিনি বললেন,“ এই সিনেমার বিক্রি খুব বেশি ভালো হয় নি। তবে বছরের এই চার মাসের হিসেবে খারাপও হয় নি। বরং সেই হিসাবে বিক্রি ভালোই হয়েছে। আসলে সিনেমাতে শাকিব তো নাই, তাই বিক্রিটা তেমন হয় নাই। প্রথম দিন পরেই বিক্রি পড়ে গেছে, তবে এক সপ্তাহের গড় হিসাবে লোকসানের পাল্লাটা ভারী না-- এতটুকুই বলতে পারি।”

রাজধানীর শ্যামলী সিনেপ্লেক্সের ম্যানেজার হাসানও দিলেন কৌশলী উত্তর। গ্লিটজকে তিনি বললেন, “বাজার তো ভালো না। ব্যবসাও আগের মতো নেই। তাহলে আমাদের ব্যবসা একেবারে খারাপ কি গেছে? না একেবারেই খারাপ যায়নি। আবার খুব ভালোও যায়নি। বলতে পারেন ‘মুসাফির’ গড়পড়তা গিয়েছে। তবে, আমরা দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘মুসাফির’ প্রদর্শন করছি না।”

‘মুসাফির’ সিনেমার বিক্রি গড়পড়তা হয়েছে, এমনটাই দাবী করলেন সনি সিনেমা হলের ম্যানেজার সামাদ। গ্লিটজকে তিনি বললেন,“ প্রথম কয়েকদিন ভালোই গিয়েছে ‘মুসাফির’ সিনেমার বিক্রি। মন্দার বাজারে আশানুরুপ বিক্রি না হলেও এই বছরের জানুয়ারী থেকে এপ্রিল পযর্ন্ত এই চার মাসের হিসেব কষলে অন্যান্য সিনেমার তুলনায় ব্যবসা ভালোই হয়েছে। লাভও হয়নি আবার লোকসানও হয়নি। বিগত মাসগুলোর লোকসান তুলতে না পারলেও এই সিনেমার বিক্রিতে লোকশান অন্তত গুনতে হয় নি। বলতে গেলে আমাদের বিক্রি ছিলো গড়পড়তা।”

‘মুসাফির’ সিনেমার কাহিনি ও চিত্রনাট্যও লিখেছেন র্নিমাতা নিজেই। ‘মুসাফির’-এর গল্প এগিয়েছে, পেশাদার একজন খুনী ও এক তরুণীকে কেন্দ্র করে।

সিনেমায় খুনীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ আর তরুণীর চরিত্রে নবাগতা মারজান জেনিফা। আরও আছেন, মিশা সওদাগর, টাইগার রবি এবং শিমুল খান। এছাড়াও একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘অচেনা হৃদয়’ খ্যাত অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ।