গ্লিটজ: নারীকেন্দ্রিক সিনেমায় অভিনয়ের বিষয়টিকে কেমন মনে হচ্ছে?
রণবীর: সিনেমার গল্পটা শোনার পরে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। তখন একটি মূহূর্তের জন্যও ভাবিনি ‘বিজলী’ গল্পটা নারীকেন্দ্রিক নাকী পুরুষকেন্দ্রিক। আমার কাছে সিনেমার গল্পটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। একজন সুপার হিরো তিনি নারী নাকি পুরুষ হবেন তা মোটেও মূখ্য নয়।
গ্লিটজ: ক্যারিয়ারের শুরুতেই নারীকেন্দ্রিক সিনেমায় অভিনয় আপনার অভিনয় জীবনের জন্য ঝুঁকি হয়ে গেলো না?
রণবীর: সত্যি বলতে আমাদের বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে আমরা গতানুগতিক ধারার সিনেমাগুলোই দেখে আসছি। আমার কাছে সিনেমার গল্পটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় বাংলা সিনেমায় বিপ্লবের এখুনি সময়। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ‘বিজলী’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলা সিনেমায় যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। এমন একটি উদ্যোগে আমি কেন নিজেকে সম্পৃক্ত করবো না? আমি তো মনে করি এই সিনেমায় অভিনয় আমার জন্য মোটেও কোন ঝুঁকি বয়ে আনেনি। বরং আগামী দিনগুলোতে আমার অভিনয়ের ক্যারিয়ারের জন্য ‘বিজলী’ সিনেমাটি অনেক বড় অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
গ্লিটজ: সিনেমাতে বিপ্লব বলতে আপনি কোন ধরনের বিপ্লবের কথা বোঝাতে চাইছেন?
রণবীর: বাংলাদেশ ও কলকাতায় সুপারহিরোর সিনেমা এখন অবধি নির্মাণ হয়নি। কিন্তু ‘বিজলী’ সিনেমার কনসেপ্ট ও সিনেমাকে ঘিরে যেসব পরিকল্পনা রয়েছে আমি আশা করি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পরে অনেকেই এমন ধরনের সিনেমা নির্মাণে অনুপ্রাণিত হবে এবং ‘বিজলী’ সিনেমাটি বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন ধারার সংযোজন করবে। এই নতুনত্ব নিয়ে আসাটাই হলো বিপ্লব। যার শুভ সূচনা ‘বিজলী’র মাধ্যমে হতে যাচ্ছে।
গ্লিটজ: পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা শিল্পে ইতোমধ্যে বিকল্প ধারার সিনেমাগুলো নিয়ে একটা বিপ্লব হয়ে গেছে, যেখানে আপনাদের বাণিজ্যিক সিনেমার ভবিষ্যত ভয়ঙ্কর সংকটে। কিন্তু ‘বিজলী’ তো বানিজ্যিক সিনেমা। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে কতটুকু সফল হবে এটি?
রণবীর: প্রথমেই আমি একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই, বিকল্প ও বাণিজ্যিক-- এই বিভক্তিতে আমি বিশ্বাসী নই। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না প্রেক্ষাগৃহে দর্শকরা নায়ক কিংবা নায়িকা দেখতে যায় না। বরং বেলা শেষে একটি ভালো গল্পের সিনেমা দেখতেই তারা প্রেক্ষাগৃহে যায়।
বাংলাদেশে কিংবা কলকাতা কিংবা বিশ্বের এমন কোনো দেশের সিনেমার উদাহরণ কী দেয়া যাবে যেখানে শুধুমাত্র নায়ক-নায়িকাকে দেখতে গিয়েই সেই সিনেমাটি সুপারহিট হয়েছে? একটি সফল সিনেমার পিছনে একটি গল্প থাকে। সিনেমার গল্পের জন্যই দর্শক সিনেমাকে লুফে নেয়। পরিশেষে সফলতা পাওয়া প্রতিটি সিনেমাই কিন্তু বাণিজ্যিক সিনেমা।
গ্লিটজ: নারীকেন্দ্রিক সিনেমা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ও কলকাতার দর্শকরা মানসিকভাবে প্রস্তত হয়েছেন বলে মনে করেন?
গ্লিটজ: কলকাতার ছেলে হয়ে নিজের ঘরের বাহিরে ভিনদেশে কাজ করাটাকে কতটুকু চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে?
রণবীর: সত্যি কথা বলতে এই বিষয়গুলো আমি মোটেও ভাবিনি। কারণ ‘বিজলী’র মতো এমন ভালো গল্পের সিনেমাতে কাজ করাটা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার। ভালো চরিত্রে কাজ করার একটা ক্ষুধা একজন শিল্পীর ভিতরে সবসবময়ই কাজ করে। সিনেমায় আমার চরিত্রটি সেই ক্ষুধা মেটানোর চরিত্রই বলতে পারেন।
গ্লিটজ: ঢালিউড ও টালিউডের নতুনদের ভিড়ে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবেন?
রণবীর: এক পা এগোলাম নাকী এক পা পেছনে গেলাম কিংবা প্রতিযোগিতার দৌড়ে কত ইঞ্চি দূরে রয়েছি এই বিষয়গুলো আমি একদমই ভাবিনি, ভাবতে চাইও না। আমার স্থান দশ নম্বর নাকি একশ নম্বর-- এই বিষয়গুলো আমায় চিন্তায় কখনোই আসেনি।
পৃথিবীর প্রতিটি পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে একজন মানুষ পুরষ্কৃত হলেও প্রকৃতপক্ষে বিজয়ীর হাতে পুরষ্কার তুলে দেয় তার দর্শক। সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই আসল পুরস্কারটি আসে। আমি বাঙ্গালীদের জন্য সিনেমায় কাজ করছি, আমাকে বাঙ্গালীরা যদি তাদের ভালোবাসা দেয়, তাদের সমর্থন দেয় এর চেয়ে বেশি কিছু আমার আর প্রয়োজন নেই।
গ্লিটজ: শুনেছি মঞ্চ ও টেলিভিশনের অভিজ্ঞতা আপনার ঝুড়িতে রয়েছে..
রণবীর: আমি একটি আঞ্চলিক নাটকের দলের সদস্য ছিলাম। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই আমি মঞ্চের সাথে সম্পৃক্ত। মঞ্চে কাজ করার পাশাপাশি মাঝে কিছু দিন মডেলিংয়েও যুক্ত হয়েছি। তবে ‘বিজলী’ আমার জীবনের প্রথম সিনেমা।