'শটে কিছুতেই চুমু খাবে না'

অপর্ণা সেন পরিচালিত নতুন সিনেমা ‘আরশিনগর’ মুক্তি পাচ্ছে ২৫ ডিসেম্বর। উইলিয়াম শেক্সপিয়রের করুণ প্রেমকাহিনি 'রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েড' অবলম্বনে নির্মিতি এ সিনেমায় রোমিও হয়েছেন ম্যাটিনি হিরো দেব। অপর্ণা সেন জানালেন, দেবের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কিভাবে খানিকটা বিপদেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2015, 04:21 AM
Updated : 25 Dec 2015, 04:21 AM

পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আজকালকে অপর্ণ সেন বলেন, “ও কিন্তু সেটে আসতো তৈরি হয়েই। পার্ট মুখস্থ করেই শট দিত। ফলে এই যে ভার্সের আদলে সংলাপ বলা, সে বিষয়ে দেবের পেছনে আমায় তেমন খাটতে হয়নি, যেটা অন্যদের জন্য করতে হয়েছিল। তবে দেবকে খুব বকেছি। সেটা অন্য কারণে। শটে ও কিছুতেই চুমু খাবে না। ওকে বারবার বলতে হয়েছিল, ওরে তুই দেব না, তুই রোমিও। তোকে চুমু খেতেই হবে। ও চেষ্টা করতো বাংলা উচ্চারণ শুদ্ধ করতে। ওকে বলতাম যেমন বলিস তেমনই বল, পাড়ার মাস্তান অত শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলে না।”

আরো জানালেন, যে আরশিনগর তিনি দেখিয়েছেন, সেটা একটা কাল্পনিক জায়গা। এর কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা নেই।

তিনি বলেন, “সিনেমার শুরুতেই সূত্রধর রেশমা বাঈয়ের কথায় আমরা জানতে পারি ‘সকলের মনের ভেতর একটা আরশিনগর। সেই আরশিতে নিজের চেহারা দেখেছেন বাবুলোগ?’ সেই চেহারার ছবিই ফুটে উঠছে।”

“সিনেমাতে এখনকার দুর্নীতি, জমি নিয়ে কাড়াকাড়ি, সাম্প্রদায়িক হিংসা এসেছে। সেই প্রসঙ্গে ‘কালা পয়সাওয়ালা’ গানটাও বেশ বোল্ড আর প্রাসঙ্গিক।”

সিনেমাটিতে বিভিন্ন ধারার গান ব্যবহার করা হয়েছে। কাওয়ালি, পপ, রক, হেভি মেটাল, সাধারণ প্রেমের গান, ব্লুজ, বাউল গান আছে।

আরশিনগরের বাসিন্দা এক ধনী মুসলিম পরিবার এবং এক হঠাৎ বড়লোক হয়ে ওঠা হিন্দু পরিবারকে ঘিরে সিনেমার কাহিনি এগিয়েছে। হিন্দু পরিবারের ছেলে রণ মুসলিম পরিবারের মেয়ে জুলির প্রেমে পড়ে যায়।

বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষার শতাধিক সিনেমার অভিনেত্রী অপর্না সেন আশির দশকের শুরুতেই পরিচালক হিসেবে আবির্ভূত হন। প্রথম সিনেমা ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’-এর জন্য সেরা পরিচালকসহ দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি ভাষার ১১টি সিনেমার মধ্যে সবশেষ সিনেমা ‘গয়নার বাক্স’ (২০১৩) বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয়।

অপর্ণা বলেন, “এখনকার অপর্ণা সেনের আর নতুন করে কিছু পাওয়ার নেই। আমার প্রায় সব ছবিই বাণিজ্যিকভাবে সফল। কাজেই এখন চাপমুক্ত আমি। ফলে চিন্তা করতে পারছি ছবির ফর্ম নিয়ে। প্রত্যেকটা ছবিতেই বিষয়ান্তরে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এই ফর্ম নিয়ে খেলাটা খেলতে বেশ ভাল লাগছে। আর ‘আরশিনগর’ সম্পর্কে বলতে পারি, এই ছবিতে এমন অনেক কিছু আছে যা অপর্ণা সেনের কাছেও নতুন। কিন্তু একটা ভাল ইউনিট সঙ্গে থাকায় সব সমস্যাই কাটিয়ে উঠেছি।