বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবে আসছেন জাকির, শুভা  

উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতজ্ঞ-নৃত্যশিল্পী-যন্ত্রীদের নিয়ে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব শুরু হচ্ছে নভেম্বরে। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে,  ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে ২৭ নভেম্বর শুরু হয়ে উৎসবটি চলবে ১ ডিসেম্বর অবধি।  প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে অনুষ্ঠান, চলবে ভোর ৫টা অবধি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2015, 01:53 PM
Updated : 10 Oct 2015, 01:53 PM

এবারের উৎসব বাংলাদেশের চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে উৎসর্গ করা হয়েছে।

এবারের উৎসবে যোগ দিচ্ছেন ভারতীয় তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন, বাঁশিবাদক জয়াপ্রদা রামমূর্তি, কর্ণাটকি কণ্ঠশিল্পী ড. বালমুরালীকৃষ্ণ। তিনি এবারের আসরের প্রবীণতম শিল্পী। তার সঙ্গে বাঁশিতে যুগলবন্দি করবেন গ্র্যামি মনোনয়নপ্রাপ্ত  শিল্পী রণু মজুমদার।

উৎসবে প্রথমবারের মতো আরও আসছেন শিল্পী শুভা মুদগাল, শ্রুত সাদোলিকার, ধ্রুপদিয়া ওয়াসিফউদ্দিন ডাগর, বেহালাবাদক এন রাজম। কুচিপুড়ি নৃত্য পরিবেশন করবেন নৃত্যশিল্পী দম্পতি রাজা ও রাদা রেড্ডি।  

ময়মনসিংহের গৌরিপুরের প্রবাদপ্রতিম সেতারবাদক ওস্তাদ বিলায়েৎ খাঁ সাহেবের ভ্রাতুষ্পুত্র ইমরাত খান সুরবাহার বাজাবেন। তাঁর পুত্র ওস্তাদ সুজাত খান সেতার বাজাবেন। 

উৎসবে প্রথমবারের মতো সরস্বতী বীণা বাজাবেন জয়ন্তী কুমারেশ। এস্রাজ বাজিয়ে শোনাবেন শুভায়ু সেন মজুমদার। দুই বছর আগে এ উৎসবে গেয়েছিলেন অস্কার মনোনয়ন পাওয়া শিল্পী বম্বে জয়শ্রী।  তিনি এবারও আসবেন।  প্রথম ও দ্বিতীয় বছর ভরতনাট্যম পরিবেশন করেছিলেন আলারমেল ভাল্লি, তিনিও আসছেন এবার। গণেশ রাজাগোপালন ও তার ভাই কুমারেশ কর্ণাটকি বেহালায় যুগলবন্দি বাজাবেন। বিশ্বের অন্যতম মৃদঙ্গশিল্পী কড়াইকুড়ি মানি সদলবলে বাজাবেন।

পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকার, পণ্ডিত উল্লাস কশলকার, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, ওস্তাদ রশিদ খান - প্রতিবারের এবারও আসছেন।  জনপ্রিয় শিল্পী রাহুল শর্মা ও কৌশিকী চক্রবর্তীসহ উদয় ভাওয়ালকার ও সামিহান কশলকারও থাকছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক ড. অসিত রায়ের পরিচালনায় আটজনের একটি দলীয় পরিবেশনা থাকছে। বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও সংগঠক মিনু বিল্লাহর পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বাংলাদেশের ২২ নৃত্যশিল্পী। ওয়ারদা রিহাবের পরিচালনায় মণিপুরী নৃত্য পরিবেশন করবেন ৩০ জন নৃত্যশিল্পী। অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর পরিচালনায় সিলেটের আটজন শিল্পী পরিবেশন করবেন ধামার। এছাড়াও মঞ্চে আসবেন বিশিষ্ট সরোদশিল্পী ইউসুফ খান। দলীয় তালবাদ্য পরিবেশন করবেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিশুশিল্পী মোহাম্মদ ভুবন, ফাহমিদা নাজনীন, সুপান্থ মজুমদার, পঞ্চম স্যানাল। একক সংগীত পরিবেশন করবেন সুস্মিতা দেবনাথ শুচি, ধ্রুপদ পরিবেশন করবেন অভিজিৎ কুণ্ডু।

সংবাদ সম্মেলনে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন,  “প্রতি বছর এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে মানুষকে ভালো গান শুনিয়ে, উঁচু স্তরের পরিবেশনার সঙ্গে পরিচিত করে, নিজের দেশে উচ্চাঙ্গ সংগীতের ভিতকে মজবুত করতে পারবো। গানের দেশ বাংলাদেশে সব রকম গানের চর্চাই তার ফলে উপকৃত হবে।”

গত বছরের মতো এবারও উৎসব হচ্ছে পাঁচ দিনের। এ প্রসঙ্গে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের পরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, “বিগত উৎসবগুলোতে তরুণ শ্রোতাদের আগ্রহ ও মনোনিবেশ আমাদের আশান্বিত করেছে। শ্রোতাদের অতৃপ্তি আর আকাঙ্ক্ষা থেকেই তিন দিনের উৎসব বেড়ে হয় পাঁচ দিনের। ”

আয়োজকরা জানিয়েছে, প্রতিবারের মতো এবারও অনলাইনে নিবন্ধন করে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবে বিনামূল্যে প্রবেশের পাস সংগ্রহ করতে হবে। নভেম্বর মাসের শুরু থেকে সীমিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে  নিবন্ধন চলবে।  যাদের হাতের কাছে ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তারা ধানমন্ডির বেঙ্গল গ্যালারি, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বেঙ্গল সেন্টার, বনানীতে লখনৌ, উত্তরায় কুশল সেন্টারে নিবন্ধন করতে হবে।

অফ-সাইট নিবন্ধন এবং মোবাইলে নিবন্ধন অনুষ্ঠানের প্রথম দুদিন পর্যন্ত চলবে। তৃতীয় দিন থেকে আর অফ-সাইট অথবা মোবাইলে নিবন্ধন করা যাবে না, অনুষ্ঠানস্থলেও নিবন্ধন করা যাবে না। তৃতীয় দিন রাত ১টায় ফটক বন্ধ হয়ে যাবে।

ছবি- নয়ন কুমার, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম