গ্লিটজ: প্রথমে টিভিসি, তারপর মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিলবোর্ড, তারপর টিভি নাটকে...
সাবিলা : বিজ্ঞাপনে কাজ করার আগে আমি ছিলাম নাচের মেয়ে। নিয়মিত নানা প্রোগ্রামে পারফর্ম করতাম। তারপর আশীষ সেনগুপ্তের কাছে ফটোসেশন করেছিলাম। সেই ফটোসেশনের বরাতেই ডাক এলো টিভিসির। ২০১০ সালে একটি নারকেল তেলের টিভিসির পর হঠাৎ একদিন ডাক এল গ্রামীণফোনের সেই ‘টুকি তো আমাকে না বলে চলে গেলো’ শিরোনামের বিজ্ঞাপনটিতে। তারপর শহরের বিলবোর্ডগুলো ছেয়ে গেলো আমার ছবিতে। তখনও আমি অভিনয় করছি না বলেই স্থির করেছিলাম। বড় বড় পরিচালকরা এসেছিলেন। কিন্তু আমি তাদের সবিনয়ে না বলেছিলাম। কিন্তু রেদওয়ান রণি যখন ‘ইউটার্ন’ - নাটকের অফার নিয়ে আসলেন, আমি আর না বলতে পারলাম না।
গ্লিটজ: ‘ইউটার্ন’ নাটকের মাদকাসক্ত অ্যালিস চরিত্রটি করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো?
সাবিলা : দেখুন, চরিত্রটি আমার জন্য ইতিবাচকই ছিলো। মাদকাসক্তের চরিত্র করা এত সোজা না। আমি চরিত্রটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম, খুব এক্সাইটেড ছিলাম চরিত্রটি নিয়ে। আমাকে যে দেখাতে হতো, আমি অভিনয় করতে পারি। নাটকটি প্রচারিত হওয়ার পর দারুণ সাড়া পেয়েছিলাম। সবাই কিন্তু প্রশংসা করেছিলো।
গ্লিটজ : এরপরই আপনি কাজ করলেন সাগর জাহানের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘রহমান গায়েন’ নাটকে। আপনি ভোল পাল্টে অভিনয় করলেন গ্রামের মেয়ে ‘মালতি’ চরিত্রে। এই যে শহুরে চরিত্রের পর গ্রামীণ চরিত্র, প্রস্তুতি কেমন ছিলো?
গ্লিটজ: রাহাত রহমানের ‘মাংকি বিজনেস’ নিয়ে কিন্তু আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল। ‘ইউটার্ন’ নিয়েও তাই। দুটি নাটকের মধ্যে তফাৎ কোথায়? আপনি কোন নাটকটিতে অভিনয় করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন?
সাবিলা: সব চরিত্রই আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং। ‘ইউটার্ন’ নাটকে রণি ভাই আমাদের কোনো চিত্রনাট্য দেননি। তিনি মুখে যা বলতেন, যেভাবে বলতেন, আমরা নিজেরাই সে চরিত্রগুলোকে নানা রূপে, নানা আঙ্গিকে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি। কিন্তু রাহাত মারাত্মকভাবেই চিত্রনাট্যনির্ভর। চিত্রনাট্যে যা ছিলো, ঠিক তাই আমাকে করতে হয়েছে। এখানে নিরীক্ষা করার কোনো সুযোগ ছিল না।
গ্লিটজ: এক ঘণ্টার নাটকে না ধারাবাহিকে - কোন মাধ্যমে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য?
সাবিলা: শুরুতে আমি এক ঘণ্টার নাটকই বেশি করতে চাইতাম। পড়াশোনার চাপ ছিলো, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মতো বড় হ্যাঁপা ছিল। এখন তো আমি সিরিয়ালে কাজ করছি। ইমরাউল রাফাতের ‘কলিংবেল’ চলছে, হাসান মোর্শেদের ‘আদর্শলিপি'তেও কাজ করছি। মাবরুর রশীদ বান্নার ‘হাউজ নম্বর ৪৪’, সাফায়াত মনসুর রানার ‘হোয়াট ইজ লাভ’, রাফাতের ‘ভালোবাসার ভূত ও ভবিষ্য’ নাটকগুলোও শিগগিরই প্রচারিত হবে।
গ্লিটজ: আপনার নতুন সিরিয়ালগুলোর সবগুলোই কিন্তু শহুরে গল্প। অনেকেই বলছেন, হালের টিভি নাটকগুলোর কাহিনী একই রকম হয়ে যাচ্ছে। চরিত্রগুলোও কি একঘেঁয়ে মনে হয়?
সাবিলা : আমি সব সময়ই চেষ্টা করি নতুন নতুন চরিত্রে অভিনয় করতে, চরিত্রে ভিন্নতা আনতে। ‘কলিংবেল’ নাটকে আমি প্রাণোচ্ছল মেয়ে, একটু রাগী, যে কি না হুটহাট রেগে যায়। অন্যদিকে ‘আদর্শলিপি’ নাটকে আমি একজন স্কুল শিক্ষক, ‘হাউজ নং ৪৪’ নাটকে আবার ধীরস্থির।
গ্লিটজ: ধারাবাহিক নাটকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সব চরিত্রই সব সময় সমানভাবে ফুটিয়ে তোলা হয় না। সেক্ষেত্রে আপনার অভিনীত ধারাবাহিক যেগুলো এখন প্রচারিত হচ্ছে, সেগুলোতে আপনাকে কতটা মূল্যায়ন করা হচ্ছে?
সাবিলা : আমি এ ব্যাপারে সব সময়ই সচেতন। আমি এক ঘণ্টার নাটকে বরাবরই প্রধান চরিত্রে কাজ করতে চাই । ধারাবাহিকগুলোতেও কিন্তু আমার চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ। নানা সময়ে আমার চরিত্রগুলোর নাটকের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
গ্লিটজ : আপনার স্বপ্নের চরিত্র...
আসে। একইভাবে অন্ধ মেয়ের চরিত্রও আমার কাছে খুব চ্যালেঞ্জিং।
গ্লিটজ: আজকাল নাট্যকাররা নতুনদের নিয়ে প্রায়ই নিরীক্ষা করছেন। আপনি নিরীক্ষাধর্মী চরিত্রে কাজ করবেন?
সাবিলা: আমি সব সময়ই নিরীক্ষামূলক নাটকে কাজ করতে চাই। আজকাল তো নিরীক্ষা করতে গিয়ে পরিচালকরা ভজঘট বাধিয়ে ফেলে। অনলাইন টিভি চ্যানেলগুলোতেও সেন্সরশিপ নেই, তাদের নাটকে অশ্লীলতা ঢুকে পড়েছে এক্সপেরিমেন্টের নামে। আমি এমন নাটকে কাজ করতে চাই না। আমার পরিবারও আমাকে দেবে না।
গ্লিটজ: সিনেমা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা? বাংলা সিনেমা দেখেন?
সাবিলা : সত্যি বলি, আমার বাংলা সিনেমা দেখা হয় না। সিনেমা নিয়ে এ মুহূর্তেই আমি ভাবছি না। আমি আরও অনেকদিন পরে সিনেমাতে কাজ করবো হয়তো। আমার পরিবারের সায়ও লাগবে।