মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। আদিলের ছেলে বাবুজ রাইয়ান জানিয়েছেন, আদিল দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন, তার হৃদপিণ্ডেও সমস্যা ছিল।
বাবুজ আরও জানান, বেশ কয়েক বছর আগে চলচ্চিত্রকে বিদায় জানানো অভিনেতা আদিল আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন। গত বছর হঠাৎ তার স্মৃতিশক্তি বিলুপ্ত হতে শুরু করে নিজেকে আইন পেশা থেকে সরিয়ে নেন। তারপর ঘরেই কাটছিলো তার দিন।
আদিলের স্ত্রী নাসরিন আক্তারের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মজিবুল হক পলাশ জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে আদিল বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
পলাশ জানান, রোববার দুপুরে বাদ জোহর স্থানীয় মসজিদে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মরহুমের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে শহরের মাসদাইরে পৌর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
আদিলের ছোট ভাই হাজী মনছুরউজ্জামান গ্লিটজকে জানান, তার বড় ভাই অভিনেতা আদিল ছাত্রজীবন থেকেই মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি পাকিস্তান আমলে টেলিভিশনের নাটকে অভিনয় করেছেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালে হাসমত পরিচালিত ‘এখানে আকাশ নীল’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পন করেন।
‘নসীব’, ‘নীলিমা’ ও ‘উছিলা’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। পরবর্তীতে ‘আকাশনীলা’, ‘তিন টেক্কা’, ‘রাজদুলালী’, ‘চাচ্চু’ ও ‘হনুমানের পাতাল বিজয়’সহ অসংখ্য ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয় করে আদিল খলনায়ক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। অভিনয় জীবনে তিনি প্রায় তিনশতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যবসাসফল ছবি ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছিল চলচ্চিত্রে তার অভিনীত শেষ ছবি।
মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা আদিলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতিসহ বিনোদন সাংবাদিকদের সংগঠন বাচসাস।