পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজারকে অঞ্জন দত্ত বলেন, “আমি জীবনের শেষ ইনিংস খেলছি। বয়স ৬১ হল। নিজের গল্প অনেক বললাম। সেটা বলতে বলতে মিডিওক্রিটি চলে আসছিল। বুঝতে পারছিলাম, আমি আমার গল্পে যে মেসেজ দিতে চাই সেগুলো ক্লাসিক লিটারেচারে আগেই বলা হয়ে গিয়েছে...”
হ্যামলেট হিসেবে পরমব্রতকে নির্বাচনের বিষয়ে অঞ্জন বললেন, “ও ছাড়া কলকাতায় কোনও হিরো নেই যে হ্যামলেট করতে পারে। ওর মধ্যে একটা অদ্ভুত ইন্টেলেকচুয়াল কনফিউশন আছে। একটা পাগলামি আছে। একটা অনিশ্চয়তা আছে। তাই পরমই ছিল আমার ফার্স্ট চয়েস। আর শেক্সপিয়র করতে হলে পোড় খাওয়া ফিনিশ্ড অভিনেতা দরকার হয়।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সিনেমা নির্মাণের কথা জানিয়ে স্ট্যাটাস দেন অঞ্জন দত্ত। এরপর থেকেই আলোচনার ঝড় বইছে অনলাইনে।
সিনেমার গল্প নিয়ে অঞ্জন বলেন, “আমার প্রেমাইস বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। সঙ্গে এন্টারটেনমেন্ট মিডিয়া। এখানে হ্যামলেটের বাবা ষাটের দশকের এক বিখ্যাত প্রোডিউসর, বিরাট প্রতিপত্তি। কিন্তু আশির দশক থেকে ব্যবসা নিম্নমুখী। এ রকম কিছু বছর চলার পর বাবার মৃত্যু। ধীরে ধীরে কাকা সিনেমা ব্যবসাটা নিজের হাতে নেয় আর তামিল-তেলেগু ছবির রিমেক বানিয়ে আবার তারা ইন্ডাস্ট্রির এক নম্বর প্রযোজক।”
হ্যামলেটের বাবা চরিত্রে কে অভিনয় করছেন বলেননি, তবে অন্যান্য চরিত্র সম্পর্কে খোলাখুলি কথা বলেছেন নির্মাতা। যিশু সেনগুপ্ত অভিনয় করবেন হোরেশিও চরিত্রে, সিনেমায় তার নাম হীরক। ক্লডিয়াসের বাংলা নাম কল্যাণ, অভিনয় করবেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। হ্যামলেটের মা গারট্রুড হলেন গায়ত্রী, অভিনয় করবেন গার্গী রায় চৌধুরী। ওফেলিয়ার চরিত্র করবেন পায়েল সরকার।
শ্যুটিং পুরোটাই হবে কলকাতায়। পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু। মুক্তি পেতে পারে আগামী বছর।
‘হ্যামলেট’-এর ছায়া অবলম্বনে ২০১৪ সালে হিন্দিতে ‘হায়দার’ নির্মাণ করেন কৃতী নির্মাতা ভিশাল ভারাদওয়াজ। হ্যামলেটের চরিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন শাহিদ কাপুর। তবে অঞ্জনের মন কাড়তে পারেনি সিনেমাটি।
“ওটা দেখেই আমার মাথায় আসে যে, আমি এর থেকে বেটার অ্যাডাপ্টেশন করতে পারব। ভিশালের ‘মকবুল’ আমার অসাধারণ লেগেছিল। আমার মতে ওঁর ‘ম্যাকবেথ’ কুরোসাওয়া, পোলানস্কি লেভেলের। তাই কোনও দিন ভুলেও ‘ম্যাকবেথ’ অ্যাডাপ্ট করতে যাব না। ‘ওমকারা’ও মোটামুটি লেগেছিল। কিন্তু ‘হায়দার’ ভাল লাগেনি।”
অঞ্জন দত্ত অভিনীত ‘নির্বাক’ মুক্তি পেয়েছে ২০১৪ সালে। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়েন্দা চরিত্র বোমকেশ বক্সীর কাহিনিনির্ভর সিনেমা ‘কহেন কবি কালিদাস’-এর শুটিং শেষ করেছেন সম্প্রতি। এ নিয়ে তিনটি ‘বোমকেশ বক্সী’ নির্মাণ করলেন তিনি।