গীতার 'বাজরাঙ্গি ভাইজান' কোথায়?

সেলুলয়েডের গল্প এবার উঠে এসেছে বাস্তবে। নিজের নতুন সিনেমা 'বাজরাঙ্গি ভাইজান'- এ ভারতে হারিয়ে যাওয়া এক মূক মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান সালমান। ভারত সীমান্তের ওপারে হারিয়ে যাওয়া মূক-বধির মেয়ে গিতা অবশ্য আজও কোনো বাজরাঙ্গি ভাইজানের অপেক্ষায়।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2015, 12:16 PM
Updated : 5 August 2015, 03:57 PM

বিবিসি বাংলা বলছে, ১৫ বছর ধরে পাকিস্তানেই থাকতে হচ্ছে ভারতীয় এই মেয়েটিকে। 'বাজরাঙ্গি ভাইজান'-এ দেখানো মুন্নির মত এই মেয়েটিও কথা বলতে পারে না। মূক ও বধির হওয়ার কারণে সে বাড়ির ঠিকানা বলতে অপারগ। 

ভারতের সীমান্ত পার হয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিল মেয়েটি, তখন তার বয়স ছিল ৮-৯ বছর। পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষী বাহিনি পাঞ্জাব রেঞ্জার্স তাকে উদ্ধার করে। 

এরপর মেয়েটিকে পাকিস্তানের সমাজকল্যাণ সংস্থা এদহি ফাউন্ডেশনের হাতে তুলে দেয় তারা। প্রথম কিছুদিন লাহোরের এদহি সেন্টারে কাটানোর পর তাকে করাচিতে নিয়ে আসা হয়। এদহি ফাউন্ডেশনের প্রধান বিলকিস এদহির তত্ত্বাবধানে বড় হয় গীতা। 'মাদার অফ পাকিস্তান' হিসেবে খ্যাত সমাজকর্মী বিলকিসই তার নতুন নাম রেখেছিলেন।

গীতার বয়স এখন ২৩ বছর। গত ১৫ বছর ধরে চলছে তার পরিবারকে খোঁজার চেষ্টা। ভারতের মানচিত্র দেখে চিনতে পারলেও গীতা বলতে পারে না ঠিক কোন এলাকায় থাকতো সে।

'বাজরাঙ্গি ভাইজান' সিনেমাটি পাকিস্তানে মুক্তির পর আরও একবার সামনে আসে গীতার কাহিনি। মেয়েটির পরিবারের খোঁজ পাওয়ার জন্য অনেকদিন ধরেই ফেইসবুক একটি পেইজ খুলে প্রচার চালাচ্ছেন পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক মন্ত্রী আনসার বার্নি। এবার নতুন করে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

বার্নির এই আবেদন দেখে সম্প্রতি গীতার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে ভারত সরকার। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের নির্দেশে ৪ অগাস্ট করাচিতে গীতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ড. টিসিএ রাঘবন।

এগিয়ে এসেছেন 'বাজরাঙ্গি ভাইজান'-এর পরিচালক কবির খানও। তিনি জানান, সিনেমাটি নির্মাণের সময় গীতার গল্প জানতেন না তারা। তবে গীতার পরিবারকে খুঁজে বের করতে যথা সম্ভব সাহায্য করতে চান। 

"কয়েকদিন আগে আমরা গীতার খবর জানতে পারি, ব্যাপারটা আমাদের জন্য বিস্ময়কর ছিল। 'বাজরাঙ্গি ভাইজান'-এর গল্পের সঙ্গে অনেক মিল রয়েছে গীতার গল্পের।"

সিনেমাতে এক পাকিস্তানি সাংবাদিকের ভূমিকায় দেখা গেছে অভিনেতা নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিকে। সেখানে মুন্নির পরিবারকে খুঁজতে গণমাধ্যমের ভূমিকান উপর জোর দিতে দেখা যায় তাকে।

কবির বলেন, "সিনেমাতে নাওয়াজউদ্দিনের একটি সংলাপ ছিল এমন, যেখানে তিনি বলেছিলেন হারিয়ে যাওয়া মেয়েটির পরিবারকে খুঁজে বের করতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে গণমাধ্যম। আর সেই পথেই এগোচ্ছি আমরা।"