মুক্তিযুদ্ধ –ঐতিহ্যকে ধারণ করে চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের (বিসিটিআই) প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ‘সমৃদ্ধ’ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণে ‘প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি করবে’ বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2015, 06:33 PM
Updated : 30 July 2015, 06:33 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিসিটিআই আয়োজিত ইন্সটিটিউটের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও সুচারু কর্মপরিকল্পনায় প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, “সব কাজে, সব বয়সেই প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হতে পারে। বিসিটিআই-এর প্রথম প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণে ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।”

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, “সংস্কৃতি চর্চা ও নান্দনিকতার ক্ষেত্রে আমাদের একটি ঐতিহ্য আছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এফডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের পথচলা শুরু। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জন রয়েছে। কিন্তু তারপর সব থেমে যায়। প্রায় ২০-২২ বছর পরে আমরা আবার কাজ শুরু করি। তারপর আমরা আস্তে আস্তে এগিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে আজকের এই পর্যায়ে পৌঁছাতে আমাদের ৬৭ বছর লেগেছে।”

অর্থমন্ত্রী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী তরুণ নির্মাতা ও প্রযোজকদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পকে সমৃদ্ধ করার আহ্বান জানান।

‘সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় নবতরঙ্গ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ঐকান্তিক ইচ্ছায়’ চলচ্চিত্র শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি ইন্সটিটউিট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন প্রণীত হয়। ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করেন।

তথ্যমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে বাংলাদেশের সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় ‘প্রধান বাধা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “বিসিটিআই দক্ষ তরুণ চলচ্চিত্রকার ও প্রযোজক সৃষ্টির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির উত্থান প্রতিরোধ, জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনরুদ্ধার, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প থেকে বাংলাদেশের মানুষকে উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

সমাবর্তন বক্তৃতায় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল রাজনীতির কথাই ভাবেননি, সংস্কৃতির কথাও ভেবেছেন। বঙ্গবন্ধু সব সময় বলতেন, দেশে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”

তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ বলেন, ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত নির্মাতা ও প্রযোজকদের কর্মসংস্থান এবং শ্রেষ্ঠ নির্মাতাদের জন্য সরকারি অনুদান প্রদানে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপারেও অবহিত করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিসিটিআই-এর প্রধান নির্বাহী ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রশিক্ষণ (ডিপ্লোমা) কোর্সের কোর্স পরিচালক মসীহ উদ্দিন শাকের, টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনা (ডিপ্লোমা) কোর্সের কোর্স পরিচালক ম. হামিদ।