'জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে'

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাংলাদেশের মতো সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে রক্ষা করতে বৈশ্বিক উদ্যোগের ওপর জোর দিলেন ব্রিটেনের প্রবীণ রাজনীতিক ফ্রাঙ্ক ডবসন। সৈয়দ নাহাস পাশা জানাচ্ছেন লন্ডন থেকে

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2009, 01:37 PM
Updated : 7 Nov 2009, 01:37 PM
সৈয়দ নাহাস পাশা, লন্ডন থেকে
লন্ডন, নভেম্বর ০৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে একযোগে পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে ব্রিটেনের প্রবীণ রাজনীতিক ফ্রাঙ্ক ডবসন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বলেছেন, এর প্রভাব থেকে বাংলাদেশের মতো সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।
বাংলাদেশকে 'সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ' দেশ হিসেবে অভিহিত করে ব্রিটেনের সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, 'ব্যাপক পরিসরে' দীর্ঘমেয়াদী অভিযোজন পরিকল্পনায় সমর্থনের মাধ্যমেই কেবল বাংলাদেশ রক্ষা পেতে পারে।
"আর কোনো কিছুতে কাজ হবে না", বলেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে হাউস অব কমন্সে পাঁচ ঘণ্টার ওই বিতর্কে এ সব কথা বলেন ক্ষমতাসীন লেবার দলের এই সাংসদ।
এতে ব্রিটেনের জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড বলেন, ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে গ্রিন হাউজ গ্যাস কমাতে ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকবে এমন নতুন চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
মিলিব্যান্ড বলেন, বরং 'রাজনৈতিক সমঝোতা' হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে ওই রাজনৈতিক সমঝোতা গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর নতুন চুক্তি সম্পাদনের 'স্পষ্ট সময়সীমার' পথে অগ্রসর হওয়ার কাজে লাগতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
"আমি মনে করি, সংখ্যার উল্লেখ না থাকলে তা কোনো চুক্তি নয়। কার্যত তা হবে একেবারেই একটি দুর্বল চুক্তি", এমপিদের উদ্দেশে বলেন মিলিব্যান্ড।
প্রসঙ্গত, এর আগে গৃহীত কিয়োটো সনদের মেয়াদ ২০১২ সালে শেষ হয়ে যাচ্ছে। গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে, তাই নির্ধারণ হওয়ার কথা কোপেনহেগেনে।
কমন্সে ডবসনের দেওয়া ভাষণের কেন্দ্রে ছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের 'সীমান্তরেখায়' উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমি জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা একটি জায়গায় মনোযোগ দিতে চাই, তা হচ্ছে বাংলাদেশ। যে দেশটি ইংল্যান্ডের চেয়ে সামান্য বড় কিন্তু জনসংখ্যা আমাদের প্রায় তিনগুণ বেশি।"
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বন্যার সমস্যা তুলে ধরে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশটিতে তিনটি আলাদা উৎস থেকে বন্যার পানি ঢোকে। এ প্রসঙ্গে তিনি মৌসুমি বৃষ্টিপাত, হিমালয়ের বরফ গলা পানি এবং বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঘড়ের ফলে সৃষ্ট বন্যার কথা উল্লেখ করেন।
"বন্যার এ তিনটি উৎসই সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যা করা যেতে পারে তা হচ্ছে প্রতিকারের চেষ্টা করা", বলেন ডবসন।
এ সময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশকে দেওয়া ব্রিটেনের প্রতিশ্র"তির প্রশংসা করে জানান, ব্রিটেন বাংলাদেশকে ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড দিচ্ছে এবং আগামীতে আরো ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছে।
"এখনকার সমস্যা মোকাবেলার জন্য জরুরিভিত্তিতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষার জন্য তহবিলের পাশাপাশি একযোগে ব্যাপক পরিসরে মনোযোগ দিতে হবে" বলেন তিনি।
"অন্যথায় বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ (সাত কোটি) প্রতি বছরই বন্যায় আক্রান্ত হতে পারে। এবং নিচু এলাকার এক-দশমাংশ তলিয়ে যাবে", বলেন তিনি।
লন্ডনের হলবর্ন ও সেন্ট প্যানক্রাসের এমপি ডবসন এ বছরের প্রথম দিকে সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি সফরের জন্য বাংলাদেশে আসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএনপি/আরএএইচ/এজে/এসকে/০২৩০