টাকায় বাড়লেও অনুপাতে কমেছে শিক্ষা-প্রযুক্তির বরাদ্দ

বাজেটের আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকার অংকে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হলেও মোট ব্যয়ের শতকরা হিসাবে আগের বছরের তুলনায় এর পরিমাণ কমেছে।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2015, 04:16 PM
Updated : 4 June 2015, 04:16 PM

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ দেখানো হয়েছে মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৬ শতাংশ।

জনপ্রশাসনে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ এবং সরকারের নেওয়া ঋণের সুদ বাবদে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ বরাদ্দের পর শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতেই সর্বোচ্চ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

গতবছর আড়াই লাখ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া মুহিত এবার মোট ব্যয়ের আকার ২০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন।

কিন্তু গত অর্থবছর যেখানে শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ১ শতাংশ রাখা হয়েছিল, এবার আনুপাতিক হারের বিবেচনায় বরাদ্দ কমেছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট।

নতুন অর্থবছরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৭ হাজার ১০৩ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ১৪ হাজার ৫০২ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১ হাজার ৫৫১ কোটি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে মুহিত।

সব মিলিয়ে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৩৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন তিনি।

গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি মিলিয়ে মোট ৩২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল।

গত পাঁচ অর্থবছরের বাজেটে কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কেবল ২০১৩-১৪ অর্থবছর ছাড়া প্রতিবারই মোট বাজেটের অনুপাত শিক্ষায় বরাদ্দ আগের বছরের তুলনায় কমেছে।

২০১০-১১ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল মোট বাজেটের যথাক্রমে ৭ দশমিক ৮৬, ৬ দশমিক ৯৪, ৬ দশমিক ৪৫, ৭ দশমিক ৫১, ৬ দশমিক ২০ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় ২০১৮ সাল নাগাদ প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানান।

তিনি বলেন, “সৃজনশীল প্রশ্নপত্র, মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, উপবৃত্তি প্রদান এবং ইংরেজি ও গণিতের শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে।”

মুহিত জানান, শতভাগ ভর্তির সুফল ধরে রাখতে ৯৩ উপজেলায় সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩৩ লাখ ৯০ হাজার শিশুর জন্য স্কুল ফিডিং কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

“জনমিতিক লভ্যাংশের সুবিধা কাজে লাগাতে ৯২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০টি উপজেলায় একটি করে কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”

এছাড়া প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে গার্লস টেকনিক্যাল স্কুল, ২৩টি উপজেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, চারটি বিভাগীয় শহরে চারটি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং সকল বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

মুহিত বলেন, ১৫-৪৫ বছর বয়সী নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে মৌলিক সাক্ষরতা ও জীবনদক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ দিতে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চ শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতে অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।