পুঁজিবাজারে আর ‘বাবল’ হবে না: মুহিত

সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে ভবিষ্যতে পুঁজিবাজার অকারণে ফুঁলে-ফেঁপে উঠবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2015, 01:55 PM
Updated : 29 May 2015, 02:50 PM

তিনি বলেছেন, “সত্যিকার অর্থেই একটা স্টক মার্কেট গড়ে তুলতে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করেছি। গত পাঁচ বছরে নানা পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটা পুঁজিবাজার হয়েছে।

“আমার বলতে দ্বিধা নেই, আগে দেশে কোনো পুঁজিবাজার ছিল না। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, এটা ‘ফাটকা’ বাজারই ছিল।

“আমরা বাজারে যে স্বাভাবিক অবস্থা এনেছি, সেটাকে এখন রক্ষা করতে হবে।”

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের লভ্যাংশের চেক গ্রহণ করে এ সব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

মুহিত বলেন, “স্টক মার্কেটে ওঠানামা সবসময় থাকে। বড় ধরনের পতন হলে অর্থনীতি কিছুটা বিপদে পড়ে। তবে আমাদের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বর্তমানে যেসব আইন ও বিধিমালা সংস্কার করা হয়েছে, তাতে পুঁজিবাজারে ‘বাবল’ সৃষ্টির সুযোগ প্রায় রহিত হয়ে গেছে। তবে পুরোপুরি রহিত হয়েছে- এমনটা বলতে পারব না। আরো কয়েক বছর পর হয়ত বলতে পারব।

‘পুঁজিবাজারের উন্নয়নেই আইসিবি গঠন করা হয়েছিল’ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বাজারের আচরণ যাতে ভালো থাকে সেদিকে আইসিবিকে নজর দিতে হবে। মনে রাখতে হবে- পুঁজিবাজারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পুঁজির সংস্থান করা। আমাদের এখানে ব্যাংকগুলো সেটা করছে। কিন্তু এটা তাদের দায়িত্ব নয়।”

২০১৩-১৪ অর্থবছরে আইসিবিতে সরকারের শেয়ারের লভ্যাংশ বাবদ ৫১ কোটি ২৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার চেক অর্থমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মজিবউদ্দিন আহমেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফায়েকুজ্জামান।

মজিবউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইসিবি এখন একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আইসিবি ভূমিকা রাখছে। প্রতিবছরই এর মুনাফা বাড়ছে।

“এবার আমরা সরকারকে গত বছরের চেয়ে ৬ কোটি টাকা বেশি মুনাফা দিয়েছি।”

২০১০ সালে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক বাড়তে বাড়তে প্রায় ৯ হাজার পয়েন্টে উঠে যায়। লেনদেন ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত উঠে।

ওই বছরের শুরু থেকেই অস্বাভাবিকভাবে লেনদেন ও দাম বাড়ার রেকর্ড হতে থাকলে অনেকেই বেশি লাভের আশায় বিনিয়োগ করতে পুঁজিবাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কিন্তু বছরের শেষ দিকে এসে আকস্মিক ধস এলোমেলো করে দেয় পুঁজিবাজার। অনেক বিনিয়োগকারী প্রায় সর্বস্ব হারিয়ে হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে, যার প্রকাশ ঘটে ডিসেম্বরে বিক্ষোভ আর ভাংচুরে।

ওই বছর ৮ অক্টোবর ডিএসইতে বড় ধরনের দরপতন হয়। লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টায় সাধারণ সূচক প্রায় ৫০০ পয়েন্ট কমে যায়। ১৯৯৬ সালে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শেয়ারের আকস্মিক উত্থান-পতনের ‘কালো দিবসের’ পর এটাই সর্বোচ্চ দরপতন। এর পর একদিনে সর্বোচ্চ দরপতন হয় ১৯ ডিসেম্বর। সেদিন সূচক ৫৫১ পয়েন্ট কমে যায়।

তারপর বাজারে ধস নামে। প্রায় তিনবছর বাজারে মন্দা বিরাজ করে; সূচক ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। সম্প্রতি সূচক কিছুটা বেড়ে বৃহস্পতিবার ৪ হাজার ৫৪৪ পয়েন্টে উঠে।