পোশাক খাতে উৎসে কর বাড়ছে

আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2015, 05:32 PM
Updated : 15 May 2015, 06:46 PM

একই সঙ্গে বাজেটের পর বিভিন্ন রপ্তানি খাতে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তার হারও পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা পরিষদের (বিআইডিএস) আয়োজনে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

‘পোশাক শিল্পের কাছ থেকে এখন আদায় করার সময় এসে গেছে’ মন্তব্য করে মুহিত বলেন, “বিশেষ পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের উৎসে কর দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

“এখন একবারেই আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া একটা বড় জাম্প হবে। সেটা করা গেলে ভালো হতো। কিন্তু সেটা হয়ত সম্ভব না। দেখি কতটা করা যায়।”

পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন পুনঃনির্ধারণ ও ২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত বছরের এপ্রিলে পোশাক রপ্তানি আয়ের উপর আরোপিত উৎসে করহার দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো হয়।

এই করহার কমানোর ফলে বছরে সরকারের রাজস্ব আয় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কম হবে বলে সেসময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়।

তবে উৎসে করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য করে দশমিক ৩০ শতাংশ হারে উৎসে কর পাঁচ বছর বহাল রাখার দাবি জানিয়ে আসছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

বিআইডিএসের সম্মেলনকক্ষে সংস্থার মহাপরিচালক কে এ এস মুরশীদের সভাপতিত্বে ‘বাজেট ২০১৫-১৬: সিলেক্টেড অ্যানালিটিক্যাল স্টাডিজ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তার হার কমানোরও আভাস দেন সরকারের এই জেষ্ঠ মন্ত্রী।

মুহিত বলেন, “ক্যাশ ইনসেনটিভ রেটও রিভিও করা হবে। তবে সেটি এখনই নয়। বাজেটের পরে করা হবে।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদও নগদ সহায়তা নিয়ে একই ধরনের বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, “আমরা নগদ সহায়তার নীতি পর‌্যালোচনা করছি। নতুনভাবে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। বর্তমানে যে খাতে যেভাবে দেওয়া হচ্ছে সেরকম হয়ত থাকবে না। নতুন বাজারে রপ্তানি ও নতুন পণ্য রপ্তানির বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে।”

তৈরি পোশাক শিল্প সরাসরি নগদ সহায়তা না পেলেও রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে বস্ত্র বিক্রির উপর ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পায় দেশি বস্ত্র খাত। বছরে পাওয়া ১৩শ’ কোটি টাকার এই নগদ সহায়তা বিভিন্ন খাতে দেওয়া সরকারের মোট নগদ সহায়তার প্রায় ৫০ শতাংশ। 

এর আগে বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন সুলতানা বর্তমানে নগদ সহায়তা বণ্টনের কৌশল ও নীতির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “মোট নগদ সহায়তার ৯০ শতাংশ যাচ্ছে বস্ত্র, পাট, হিমায়িত মৎস ও চামড়া খাতে। তাহলে নতুন পণ্য রপ্তানিতে উৎসাহটা কোথায়? এখন ভাবার সময় এসেছে- নগদ সহায়তা কোথায়, কতটা, কীভাবে দেওয়া হবে।”

এছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ হেলাল, সাবেক সচিব নূর হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক স্বপন আদনান ও সিপিডির ইশতিয়াক বারী।