রানা প্লাজা  ধস: ৭৬ কোটি টাকা পেয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা

দুই বছর আগে সাভারের রানা প্লাজা ধসে হতাহত শ্রমিকদের জন্য ৭৬ কোটি টাকা বিতরণ করেছে বলেছে জানিয়েছে ক্ষতিপূরণ প্রদানে গঠিত সমন্বিত কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2015, 06:56 PM
Updated : 25 April 2015, 06:56 PM

শনিবার গুলশানে রানা প্লাজা ক্লেইমস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (রানাপ্লাজা সমন্বয় কমিটি) কার‌্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন অনুযায়ী রানা প্লাজার পাঁচটি পোশাক কারখানার মধ্যে চারটির ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক, তাদের পরিবার ও নির্ভরশীল দুই হাজার ৮৩৯ জনকে এ অর্থ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আইএলওর নেতৃত্বে বিজিএমইএ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতা, বেসরকারি সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন ও প্রধানমন্ত্রীর কার‌্যালয়সহ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া অর্থ সাহায্য নিয়ে গঠিত ‘ডোনারস ট্রাস্ট ফান্ড’ থেকে এসব সাহায্য বিতরণ করা হয়।

এসব উৎস থেকে অনুদান পাওয়া মোট ১২৬ কোটি টাকার ৩১ কোটি টাকা উপযুক্ত দাবিদারদের মধ্যে বিতরণ করেছে রানা প্লাজা ক্লেইমস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

মোট ক্ষতিপূরণের প্রায় ৩০ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে নিহত শ্রমিকদের দুই হাজার দুইশ’ ৭৭ জন নির্ভরশীল, নিখোঁজ শ্রমিকদের ৪০৯ জন নির্ভরশীল এবং দুইশ’ ৮২ জন আহত শ্রমিকের মধ্যে।

কমিটির কাছে থাকা মোট দুই হাজার আটশ’ ৭১টি ক্ষতিপূরণের দাবির মধ্যে বাকি ৩২টি পরবর্তী কিস্তিতে অন্তর্ভুক্ত করে অর্থ দেওয়া হবে। এছাড়া অতিরিক্ত ৩০ জন নিহত শ্রমিকের দাবিও এগুলোর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কমিটির নির্বাহী কমিশনার ড. মোজতোবা কাজাজি অর্থ বিতরণের তথ্য তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন কমিটির অপর দুই কমিশনার সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল।

মোজতোবা কাজাজি বলেন, “এই ক্ষতিপূরণ শ্রমিকদের বেতন, বয়স, নির্ভরশীলের সংখ্যা ও বয়স, শারিরীক ক্ষতির পরিমাণসহ বিভিন্ন কারণে সবাইকে একই পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি শ্রমিক যেন সাধারণভাবে কিছুটা ক্ষতিপূরণ পায় আমরা সেই চেষ্টা করেছি।”

এবিএম খায়রুল হক বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া আহত, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের তালিকা পর‌্যালোচনা করে‍ উপযুক্ত দাবিদারদের খুঁজে বের করা হয়েছে।

“তাদের খুঁজে বের করার জন্য সাভারের উপজেলা প্রশাসক ও অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি থেকে শুরু করে শ্রমিকদের গ্রামের ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা প্রশাসকের কাছেও চিঠি পাঠিয়েছি আমরা। আমাদের কাছে যাদের তথ্য এসেছে, আমরা নিজেরাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।”

এরপরেও যদি কারো কাছে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের তথ্য থাকলে ০১৭৩৩৩৩৬০২২ নম্বরে ক্লেইমস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে জানালে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর‌্যন্ত দুই হাজার সাতশ’ ৭০ জনের মধ্যে মোট ২৯ দশমিক ৪০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে বিতরণ করা হয়।

নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিক ও তাদের নির্ভরশীলদের মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বিনামূল্যে খোলা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাঁচটি কিস্তিতে দেওয়া হয়।

এছাড়া গত ২৩ এপ্রিল আরো ১৫ দশমিক ৫০ কোটি টাকা ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।

তবে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সব আহত, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে মোট ১৩০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে বলে রানা প্লাজা ক্লেইমস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মনে করছে।