ব্যাংক ডাকাতি: নিহতদের পরিবারের পাশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের কাঠগড়া শাখায় ডাকাতির ঘটনায় নিহত সাতজনের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2015, 05:35 PM
Updated : 22 April 2015, 05:35 PM

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী অনুদানের এই ঘোষণা দেন।

সেইসঙ্গে কমার্স ব্যাংককেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে কমার্স ব্যাংকের কাঠগড়া শাখায় অস্ত্র ও বোমা নিয়ে ডাকাতরা হানা দেয়। তারা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তারক্ষীসহ তিনজনকে হত্যা করে ক্যাশ থেকে টাকা নিয়ে পালানোর সময় স্থানীয়রা প্রতিরোধ করে।

এ সময় ডাকাতদের গুলি ও বোমায় আরও তিনজন নিহত হন।  জনতার ধাওয়ার মুখে সন্দেহভাজন ডাকাতদের দুজন মোটর সাইকেল থেকে পড়ে গেলে গণপিটুনিতে নিহত হন তাদের একজন।

এস কে সুর চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক এ ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে নিহতদের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দ্য র্যো গ ব্যবস্থা তহবিল থেকে এ অর্থ দেওয়া হবে ডেপুটি গভর্নর জানান।

তিনি বলেন, “আমরা যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে নিহতদের পরিবারের হাতে এ অর্থ পৌছে দেব।”

ব্যাংক খাতের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে গভর্নর আতিউর রহমান পুলিশের মহাপরিদর্শককে একটি ডিও লেটার দিয়েছেন বলে জানান ডেপুটি গভর্নর।

তিনি বলেন, “ডাকাতির ঘটনাটি ব্যাংক খাতের জন্য হুমকিস্বরূপ। ব্যাংক খাত জনআস্থানির্ভর একটি খাত। এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনায় ব্যাংক খাতের আস্থা ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন্য আমরা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি।”

বিষয়টি নিয়ে আগামী ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে আলোচনা হবে বলেও এস কে সুর জানান।

“ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া আরও কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভল্টের নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্ধেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা ভল্টের বাইরে, মেইন গেটে সিসি ক্যামেরাসহ আর কী কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এদিন কমার্স ব্যাংকের কাঠগড়া শাখায় যান। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমার্স ব্যাংকের নিরাপত্তা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ডেপুটি গভর্নর জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে এস কে সুর বলেন, “কে কী উদ্দেশ্যে ডাকাতি করছে তা বলতে পারব না।... তবে এটা বলব, এসব হচ্ছে ইল মোটিভ থেকেই।”

ব্যাংকগুলোর যে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে তা দিয়ে ‘ছিঁচকে চোর’ সামলানো গেলেও আশুলিয়ায় ডাকাতরা যে ধরনের অস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে, তা ‘মোকাবেলা করার সামর্থ্য’ কোনো ব্যাংকেরই নেই বলে তিনি মনে করেন।

“এজন্য দরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা। একইসাথে সামগ্রিক সামাজিক নিরাপত্তার উন্নতি। আমরা (কেন্দ্রীয ব্যাংক) মনে করি, সরকার তথা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে।”

কমার্স ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাদেক মোহাম্মাদ সোহেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু নিহতদের নয়, আহত যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের চিকিৎসা খরচও বহন করবে ব্যাংক।

“তবে নিহতদের জন্য কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তা এখনও ঠিক করা হয়নি। পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”

বৃহস্পতিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি।