শনিবার ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে রেমিটেন্স বিষয়ে এক সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।
গভর্নর বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ‘পেনশনার সঞ্চয়পত্রের’ মতো প্রবাসীদের জন্য ‘পেনশন স্কিম’ চালু করা হবে।
সেমিনারের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আতিউর রহমান বলেন, “সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আমাদের প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে দেশে পাঠান। সেই টাকার অল্প কিছু অংশ যদি তারা প্রতি মাসে সঞ্চয় হিসেবে পেনশন স্কিমে রাখেন তাহলে যখন তারা দেশে ফিরবেন তখন সেই টাকা তুলে নিজে চলতে পারবেন, সন্তানদেরও চালাতে পারবেন। ছেটোখাটো বিনিয়োগেও লাগাতে পারবেন।”
তাদের সঞ্চয়ের এই অর্থ সরকার অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে, অন্যদিকে প্রবাসীরা শেষ জীবনে ‘ভালোভাবে বেঁচে থাকার’ সাহস পাবেন বলে মন্তব্য করেন গভর্নর।
বর্তমানে বাজারে থাকা ‘ডলার বন্ডের’ পাশপাশি এই ‘পেনশনার স্কিম’ চালু করা হবে বলে আতিউর রহমান জানান।
“বিদেশে ব্যাংকে টাকা রাখলে কোনো সুদ পাওয়া যায় না। আমরা যদি ৪/৫ শতাংশ সুদ দেই তাহলে প্রবাসীরা আগ্রহ নিয়ে পেনশনার প্রকল্পে (স্কিম) টাকা রাখবেন।”
সেমিনারে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা রেমিটেন্সকে উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসার কথা বলেন।
বাংলাদেশের গভর্নর বলেন, “আমরাও সেটা করতে চাই। আর সে কারণেই প্রবাসীদের জন্য পেনশনার স্কিম চালু করা হবে।”
বিশ্ব ব্যাংক সদর দপ্তরের প্রধান অর্থনীতিবিদ দিলীপ রাথার সঞ্চালনায় সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট’ এর সিনিয়র ফেলো অ্যালান গ্লিড।
আতিউর রহমান তার উপস্থাপনায় বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৮৬ লাখ লোক অবস্থান করছেন। তারা প্রতি বছর ১৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠাচ্ছেন; যা জিডিপির ৮ শতাংশের মতো।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ‘ঘুরে’ দাড়ানোয় এ দেশ থেকে বাংলাদেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়ছে বলেও জানান আতিউর।
বিশ্ব ব্যাংকের আয়োজনে এই সেমিনারে প্রবাস থেকে টাকা পাঠানো এবং বিদেশ যাওয়ার ব্যয় কীভাবে কমানো যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়।
সেমিনারের পরে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডিস এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন গভর্নর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।
গভর্নর আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ এবারও মুডিসের রেটিংয়ে ‘ভালো’ অবস্থান ধরে রাখতে পারবে।