রিজার্ভ ফের ২৩ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ফের দুই হাজার ৩০০ কোটি (২৩ বিলিয়ন) ডলারে পৌঁছেছে।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2015, 03:35 PM
Updated : 30 March 2015, 04:04 PM

সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ২৯৯ কোটি ৭০ লাখ (২২ দশমিক ৯৯৭ বিলিয়ন) ডলার। মঙ্গলবার দিনের শুরুতে এই রিজার্ভ দ্বিতীয় বারের মতো ২৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।

চলতি মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১০১ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

গত কয়েক দিনে তা আবার বেড়ে ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে।

ছাইদুর রহমান বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রপ্তানি আয় বাড়ায় রিজার্ভ বাড়ছে। এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আকুর মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের বিল শোধ করতে হবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি মাসের ২৭ দিনে (১ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত) ১১৮ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে। মাস শেষে রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৯৯১ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

হরতাল-অবরোধ-সহিংসতার মধ্যে ২৩ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ‘খুবই’ ভাল ইঙ্গিত বহন করে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এতেই প্রমাণিত হয়, সব বাধা-বিপত্তি এড়িয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন।”

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় গত বছরের ৭ অগাস্ট। আকুর বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়।

২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে তা ১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ৩০ জুন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়।

দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল।

ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এদিকে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স বাড়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ডলার কেনা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার ৭৭ টাকা ৮০ পয়সা দরে ৪০ মিলিয়ন (৪ কোটি) ডলার কেনা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (১ জুলাই থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত) বাজার থেকে ২৫১ কোটি (২ দশমিক ৫১ বিলিয়ন) ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।