কমছে এলসি

বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ ও হরতালের মধ্যে পরপর দুই মাস পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলার (এলসি) পরিমাণ কমেছে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2015, 04:25 PM
Updated : 25 March 2015, 05:10 PM

সহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে এই এলসি খোলার পরিমাণ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ মনে করছেন একজন অর্থনীতিবিদ, যিনি আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার দিকেও ইঙ্গিত দেন।
 

গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোতে ৩৫০ কোটি (৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। আর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা কমে ৩২০ কোটি ডলারে নেমে আসে।

ফেব্রুয়ারি মাসে তা আরও কমে ৩০৫ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০১৪ সাল জুড়ে দেশে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করায় আমদানিও বাড়ছিল। কিন্তু চলতি বছরের শুরু থেকেই হরতাল-অবরোধ ও সহিংসতা শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের মধ্যে এক ধরনের আস্থার অভাব পরিলক্ষিত হয়। যার প্রভাব পড়ছে বিনিয়োগে; কমছে এলসি।”

গত ৫ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ ও এর পাশাপাশি হরতাল কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি জোট।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়াও এলসি খোলার পরিমাণ কমার একটি কারণ বলে জানান জায়েদ বখত।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার আমদানি ঋণপত্র সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মোট দুই হাজার ৭৮৪ কোটি (২৭ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খোলা হয়, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি।

সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে এলসি কমেছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। আগের মাস জানুয়ারির চেয়ে কমেছে ৫ শতাংশ।

জানুয়ারি মাসে গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে এলসি কমেছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর ডিসেম্বরের চেয়ে কম ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণও কমেছে। আর ফেব্রুয়ারি মাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ কমেছে ৫ শতাংশ।

এর আগে জানুয়ারি মাসে কমেছিল ৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

রিজার্ভ ২২ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার

এদিকে আমদানি কমায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) বেড়েছে। বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার।

আগামী সপ্তাহেই রিজার্ভ ফের ২৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন) ১০০ কোটি ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রপ্তানি আয় বাড়ায় গত কয়েক দিনে রিজার্ভ ফের বেড়ে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।