ইউনাইটেড ইন্সুরেন্সের ৮ লাখ টাকা জরিমানা

বীমা আইন লঙ্ঘন করার দায়ে ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে আট লাখ টাকা জরিমানা করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

নিজস্ব পতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2015, 04:40 PM
Updated : 16 March 2015, 04:40 PM

কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণে আইন না মানায় চেয়ারম্যানসহ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যেক সদস্যকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয় আইডিআরএর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বিষয়ে গত ৫ মার্চ আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শুনানিতে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আজিজ আহমদ ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এম হাফিজউল্লাহ, এম এ আজিম, ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ, আইডিআরএ সদস্য কুদ্দুস খান, জুবের আহমেদ খাঁন, সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা ও মুরশিদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

এই শুনানি শেষে তাদের জরিমানা করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান ২০০৭ সালের ১৫ জানুয়ারি তৎকালীন বীমা অধিদপ্তর থেকে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের অনুমোদন পান। নিয়োগপত্রে সাত দিনের মধ্যে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও কোম্পানির মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্র অধিদপ্তরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি।

পরবর্তীতে আইডিআরএ প্রতিষ্ঠার পর ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ ‘বীমা কোম্পানি (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ) প্রবিধানমালা- ২০১২ এর ৬ (২) ধারা অনুযায়ী মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা অবশিষ্ট মেয়াদে বহাল রাখার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে ইউনাইটেড ইন্সুরেন্সকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ওইসব নির্দেশনা পরিপালন না করে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সৈয়দ শাহরিয়ার আহসানকে নিজ দায়িত্বে অব্যাহত রাখার অনুমতি চেয়ে কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করে।

কিন্তু ওই আবেদনেও আইন অনুযায়ী মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের অবশিষ্ট মেয়াদ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

এর ফলে আইডিআরএ ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে বীমা আইন পরিপালন না করার অভিযোগের শুনানিতে ডাকে।

গত বছরের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদের ১৮৫তম সভায় সৈয়দ শাহরিয়ার আহসানকে ২০১৪ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আইডিআরএর কাছে এ বিষয়ে আবেদন করা হয় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর।

শুনানিতে এসব বিষয় পর্যালোচনা করে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদের দীর্ঘসূত্রতা ও অবহেলা প্রতীয়মান হয়।

এ বিষয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদ শুনানিতে বলেন, “তৎকালীন বীমা অধিদপ্তর থেকে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন পেলেও শর্ত পরিপালন করা হয়নি। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি সার্কুলার জারি করা হলেও কোম্পানি কর্তৃক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগে বিধিমোতাবেক অবশিষ্ট মেয়াদ উল্লেখপূর্বক আবেদন করা হয়নি।”

বিধি মোতাবেক বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগ বা অপসারণের ঘটনা কোম্পানি কর্তৃক অবহিত হওয়ার ১৫ দিন শেষ হওয়ার পূর্বে কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে আবেদন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

কিন্তু এক্ষেত্রেও ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সৈয়দ শাহরিয়ার আহসানকে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিন হতে প্রায় ৮ (আট) মাস পরে আইডিআরএ বরাবর আবেদন করেছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চেয়ার‌ম্যান সৈয়দ আজিজ আহমদ, উদ্যোক্তা পরিচালক এম এ আজিম, এম শাহ্ আলম, এম সাইফুল ইসলাম, নিরপেক্ষ পরিচালক ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ, এম এম আলম, এম হাফিজউল্লাহ এবং জনগণের অংশের শেয়ারগ্রহীতা পরিচালক এম হারুনুর রশিদ।