গ্রাহক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ছে এজেন্ট ব্যাংকিং

ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাগুলোতে এই সুবিধা দিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চালু হয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2015, 01:45 PM
Updated : 6 March 2015, 01:50 PM

গ্রাহকদের জন্য সার্ভিস চার্জবিহীন এই বিশেষ সেবা চালুর জন্য চারটি ব্যাংক লাইসেন্স নিয়েছে।

এর মধ্যে ব্যাংক এশিয়া ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ১৯ জানুয়ারি থেকে মাঠ পর‌্যায়ে এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া শুরু করেছে।

লাইসেন্স পাওয়া সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকও এই সেবা চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এর মধ্যে ব্যাংক এশিয়া ১৭টি জেলার ৩২টি উপজেলায় ৪৯টি এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছে। আর ডাচ্-বাংলা ব্যাংক নিয়োগ দিয়েছে ৬টি এজেন্ট।

কোনো ব্যাংকের শাখা নেই এমন পল্লী একালাগুলোতে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার‌্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি বিধিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সর্বশেষ ৬ জানুয়ারি এক সার্কুলার জারি করে গ্রামের পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।

এবিষয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনও দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী ব্যাংকিং সেবার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে এই সেবার আওতায় আনতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা হয়েছে।

“এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে যেহেতু গ্রাহকের কোনো সার্ভিস চার্জ নেই, সেহেতু গ্রাহক পর‌্যায়ে বিষয়টি ইতিবাচক হবে বলে আমরা মনে করছি।”

এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার আওতায় স্বল্প পরিমাণ টাকা নিজ হিসাবে জমা দেওয়া ও তোলা যাবে। বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা যাবে। ছোট আকারের ঋণ বিতরণ ও ঋণের কিস্তি আদায়, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা যাবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, এজেন্টের কাছ থেকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির নগদ অর্থগ্রহণ করতে পারবেন গ্রাহক। এক হিসাব থেকে আরেক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করতে পারবেন। ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা রয়েছে তাও জানা যাবে।

এছাড়া এই সেবার আওতায় ব্যাংক হিসাব খোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তথ্যাদি সংগ্রহ, ঋণের জন্য আবেদন, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের আবেদন করার সুযোগ পাবেন গ্রাহক। এ সেবার মাধ্যমে বীমার প্রিমিয়ামও জমা দেওয়া যাবে।

তবে এজেন্টের মাধমে ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে না। এর জন্য নির্দিষ্ট ব্যাংকের নিকটস্থ কোনো শাখায় যেতে হবে। এজেন্ট কোনো চেক বইও ইস্যু করতে পারবে না বা কোনো ব্যাংক কার্ডও ইস্যু করতে পারবে না।

এজেন্ট বিদেশি মুদ্রাসংক্রান্ত কোনো লেনদেন করতে পারবে না। এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো চেকও ভাঙানো যাবে না।

এজেন্টরা মোট লেনদেনের ওপর কমিশন পাবেন। তবে এজেন্সি পেতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্যতা থাকতে হবে। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জামানত দিতে হবে ব্যাংককে।

নীতিমালা অুনযায়ী, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি নিয়ন্ত্রিত ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, সমবায় আইন-২০০১ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত সমবায় প্রতিষ্ঠান, ডাকঘর, কোম্পানি আইন- ১৯৯৪ এর আওতায় নিবন্ধিত যে কোনো কোম্পানি, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর এজেন্ট, ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, পল্লী ও শহুরে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় এজেন্ট হওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকিং করতে পারবে।

এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা পরিচালনা করতে পারেন এমন শিক্ষিত ব্যক্তিও এজেন্ট হতে পারবেন।