৫০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক

বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2015, 03:14 PM
Updated : 24 Feb 2015, 03:14 PM

আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ‍অন্যান্য ঋণ-সহায়তার পাশাপাশি উন্নয়ন সংস্থাটি এই সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সফররত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে (২০১৩-১৪) বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ-সহায়তা ছাড় করেছিল। চলতি অর্থবছরেও সে ধারা অব্যাহত রয়েছে।

“এই ঋণ-সহায়তার পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাংক আমাদের ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

বিশ্ব ব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কীনা- এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “না এ সব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি এ সব বিষয়ে কিছু জানতেও চাননি।

“ভদ্র মহিলা প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, প্রথম অলাপ। তিনি বলেছেন, আমি শুনেছি। আমি বলেছি..তিনি শুনেছেন। এক ধরনের আলাপচারিতা আর কি। এর বাইরে বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

“আমি তাকে বলেছি, আমরা ২০১৮ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত হব। তিনিও আমার সঙ্গে এগ্রি করেছেন”

মুহিত বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার এখন ১১ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যে। পরিসংখ্যান ব্যুরো খানাজরিপ করছে, বছর শেষে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে।

বিশ্ব ব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান মুহিত।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে দ্রারিদ্যের হার ১২ শতাংশ হলে সে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত বলা হয়।

বিশ্ব ব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন সাংবাদিকদের বলেন, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে মূলত বাংলাদেশের দ্রারিদ্র্য বিমোচন নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় চলমান প্রকল্পগুলো নিয়ে অলোচনা হয়েছে।

২০০৮ সালের পর বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো বাজেট সহায়তা পায়নি বাংলাদেশ।

পাঁচ দিনের সফরে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশে এসেছেন অ্যানেট ডিক্সন, বুধবার ঢাকা ছাড়বেন তিনি।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যালয়ে গভর্নর আতিউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯০০ কোটি (১৯ বিলিয়ন) ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি।

ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ)-এর মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোকে যত সহায়তা দিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ।

আইডিএ হলো বিশ্বব্যাংকের একটি তহবিল, যেখান থেকে দরিদ্র দেশগুলোকে নমনীয় শর্তে ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণের জন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পে আইডিএর ৭৫০ কোটি ডলারের অর্থায়ন রয়েছে।

গত বছরের অক্টোবরে বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক সভায় বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে ২০০৮ সালের পর বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো বাজেট সহায়তা পায়নি বাংলাদেশ।

বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে চার দফায় ৯০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা পায় বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৮ সালে সংস্থাটির কাছে ২০ কোটি ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ।

এরপর আর কোনো বাজেট সহায়তা বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে আসেনি।

বিশ্ব ব্যাংকের আইডিএ ঋণের জন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।