৭ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২,৩৫৯ কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে করদাতাদের কাছ থেকে ৬৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2015, 02:52 PM
Updated : 24 Feb 2015, 02:52 PM

২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে লক্ষ্যমাত্রার অর্জনে দুই হাজার ৩৫৯ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে সেগুনবাগিচার এনবিআর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।

সাত মাসের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকলেও অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলে আশাপ্রকাশ করেছেন নজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, “এ বিষয়ে মাঠ পর‌্যায়ে কর্মরত সকল কর, মুসক ও শুল্ক কমিশনারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে এবং সবাই মিলে তা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে বদ্ধপরিকর আছি।”

গত অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ে চার হাজার ৩৮০ কোটি ৪২ লাখ টাকার ঘাটতি ছিল। তখন এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয় এক লাখ ২০ হাজার ৬২১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

আর চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে সরকার এক লাখ ৪৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, “বর্তমানে জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বা শ্লথগতির মধ্যেও আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির সূচক এগিয়ে চলছে; কাঙ্খিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা সংশয় করছি না।”

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে করদাতাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “ করদাতারা দেশের মূল চালিকাশক্তি। আমরা তাদের সাথে অত্যন্ত ‘আন্তরিক অংশীজন সম্পর্ক’ বিনির্মাণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। করদাতাদের হয়রানির কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা জিরো টলারেন্স দেখাব।”

এনবিআর চেয়ারম্যান হিসেবে নজিবুর রহমানের যোগদানের পর মঙ্গলবার প্রথম সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এবিষয়ে তিনি বলেন, “আজকের (মঙ্গলবারের) বোর্ড সভায় কয়েকটি বিষয়ে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামীতে জনহিতকর বা মানবকল্যাণে দান করা অর্থ কর রেয়াত পাবে এমন একটি নীতিমালা করা হবে।”

বেগম রোকেয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়ন সংস্থার তহবিল বাড়াতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ থেকে সুদ আয়ের কর অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সভায়।

হোপ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বাংলাদেশ নামক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে দেওয়া দানের অর্থে দাতা আয়কর রেয়াত দেওয়ার এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের গাড়ীর নিবন্ধন বা ফিটনেস নবায়নে উৎসে কর অব্যাহতি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এসময় রাজস্ব প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “যে ব্যক্তি যেখানে যোগ্য তাকে সেখানে পদায়ন করা হবে। এজন্য একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। আপনারা সময়মত এগুলো দেখতে পাবেন।”

সভায় ঢাকার বৃহৎ করদাতা ইউনিট, কর অঞ্চল-১ ও কর অঞ্চল-২ থেকে সর্বোচ্চ করদাতা বাছাই করে ৩০ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কয়েকজন সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।