১৩ দিনে ৬০ কোটি ডলার রেমিটেন্স

চলতি ফেব্রুয়ারির ১৩ দিনে ৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2015, 04:26 PM
Updated : 16 Feb 2015, 04:26 PM

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগের যে কোনো মাসের প্রথম দু্ই সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে ৬০ কোটি ডলারের এই রেমিটেন্স অবশ্যই সন্তোষজনক।

বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ ও হরতালের প্রসঙ্গ টেনে ছাইদুর রহমান বলেন, “অনেকে মনে করতে পারেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রবাসীরা দেশে কম অর্থ পাঠাচ্ছেন। কিন্তু আসলে তেমনটি হচ্ছে না।”

শুধু রেমিটেন্স নয় হরতাল-অবরোধের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিও বাড়ছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ দিনে অর্থ্যাৎ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। 

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসের আগ পর্যন্ত চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে অর্থ্যাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ৮৭২ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।

সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে ১২৩ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল।

গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১২৬ কোটি ডলার। নভেম্বর মাসে এসেছিল ১১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অক্টোবরে কোটি ৮০ লাখ ডলার।

অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা, যা ছিল এক মাসের হিসাবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স।

পরের মাস অগাস্টে এসেছিল ১১৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার; সেপ্টেম্বরে ১৩৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।

রিজার্ভ ২২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার

এদিকে সোমবার দিন শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো ২২ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ালো রিজার্ভ।

প্রতি মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ছাড়ায় গতবছরের ৭ অগাস্ট। অবশ্য এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়।

৮ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের উপরে উঠে। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর বিল পরিশোধের আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করে।

১৫ ডিসেম্বর ফের রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। জানুয়ারির শুরুতে আকুর দেনা শোধের পর ফের তা ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।

রেমিটেন্স ও রপ্তানি বাড়ায় ২৮ জানুয়ারি আবার তা ২২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।  

আকুর বিল শত কোটি ডলারের বেশি

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করতে হবে। এবার আকুর বিল ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান ছাইদুর রহমান।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর‌্যন্ত আকুর সদস্যভুক্ত আটটি দেশ থেকে ৭৩ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ।

দুই মাস পর পর আকুর বিল শোধ করতে হয়। নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদে শোধ করা হয়েছিল ৯০ কোটি ডলার।