ঋণের মামলা থেকে কৃষকের মুক্তি চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ কৃষকদের মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি আপসরফার মাধ্যমে চলমান মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2015, 11:58 AM
Updated : 16 Feb 2015, 11:58 AM

সোমবার রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত সাত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।  

রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোই কৃষিঋণের বেশিরভাগ বিতরণ করে থাকে। আর ঋণ সংক্রান্ত অধিকাংশ মামলাও এসব ব্যাংকের।

বৈঠকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা জানান, বর্তমানে প্রায় দুই লাখ মামলা এবং ১০ হাজার পরোয়ানা রয়েছে।

এ চিত্রকে ‘উদ্বেগজনক’ আখ্যায়িত করে সুর চৌধুরী  বলেন, “আমরা রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোকে বলেছি, কৃষকদের বিরুদ্ধে নতুন আর কোনো মামলা না করে কিভাবে বকেয়া ঋণ আদায় করা যায়, সেই ব্যবস্থা করতে।”

কৃষকদের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা না করা, কিংবা করলেও সংখ্যাও কমিয়ে আনার পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

“এজন্য ঋণ আদায় জোরদার, কৃষকদের মধ্যে ঋণ ফেরতের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সচেতনতা বৃদ্ধি, ঋণ বিতরণের আগে যাচাই-বাছাই বাড়ানো, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পুনঃতফসিল করতে বলা হয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর বলেন, আইনে সার্টিফিকেট মামলা করার কথা থাকলেও আইন সংশোধন বা সময়োপযোগী করার দায়িত্ব আইন প্রণেতাদের।

পিডিআর অ্যাক্ট অনুসারে কোনো ঋণ তিন বছর বকেয়া থাকলে গ্রহীতার বিরুদ্ধে মামলা করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

অন্য খাতের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণের ছয় মাস পরেই খেলাপি হয় তবে কৃষিঋণ মেয়াদোত্তীর্ণের এক বছর পর খেলাপি হয়।

সুর চৌধুরী বলেন, “শাখা ব্যবস্থাপকরা পারফরম্যান্স দেখানোর জন্য অনেক সময় অতি উৎসাহী হয়ে ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা না করে মামলা করে দেন। এ বিষয়ে এখন থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গত দেড়মাস ধরে চলা হরতাল-অবরোধের কারণে পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

“শুধু কৃষি খাতই নয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, বড় শিল্পসহ সব খাতই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যদি কোনো নীতিমালা শিথিল করার প্রয়োজন হয় তবে সময়মত সে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা ও সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাকাব, বেসিক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।