এডিপির ব্যয় না হওয়া অর্থ মার্চের মধ্যে ফেরত

চলতি অর্থবছরের উন্নয়ন প্রকল্পে যে অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হবে না তা মার্চের মধ্যে ফেরত পাঠাতে প্রকল্প পরিচালকদের নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2015, 01:06 PM
Updated : 15 Feb 2015, 01:06 PM

রোববার দুই দফায় প্রায় সাতশ প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে মন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এতে বলা হয়, পরিকল্পনামন্ত্রী প্রকল্প পরিচালকদের উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ বিদেশি সাহয্যের পুরোটাই ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন।

“তিনি বলেছেন, যেসব প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ পুরো অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হবে না, তা আগামী মার্চের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে সমর্পণ করতে হবে, যাতে এই অর্থ জনগুরুত্বপূর্ণ অন্য প্রকল্পে খরচ করা যায়।”

চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকার ৮৬ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) হাতে নিয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে, অর্থ্যাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ৩২ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৩১ শতাংশ।  আর পুরো অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয়েছিল সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৯৩ শতাংশ।

অর্থবছরের শুরুতে বাজেটে যে এডিপি ধরা হয়, শেষ দিকে এসে প্রতিবছরই তাতে কাঁচি চালানো হয়। তারপরও বিদেশি বরাদ্দের টাকা ছাড় করাতে অর্থবছরের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে মান ঠিক না রেখে তড়াহুড়ো করে প্রকল্পের কাজ শেষ করার অভিযোগ ওঠে প্রতিবারই। 

মূলত গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ করতেই এ বৈঠকের আয়োজন করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বৈঠকের শুরুতেই পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ কমে এলে ব্যয়ও কমবে। এজন্য যেসব প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিলে চলতি অর্থবছরেই শেষ হবে সেসব প্রকল্পে  প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বিদেশি সাহায্যের অনেক প্রকল্পের পরিচালকই বরাদ্দের অর্থ পুরোপুরি ব্যয় করতে পারছেন না উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী  বলেন, “প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে আমরা একটা ধারা দেখছি, তা হলো - আমাদের প্রকল্প পরিচালকগণ সরকারি অর্থব্যয়ে যতটা স্বচ্ছন্দবোধ করেন, ঠিক ততটাই অস্বস্তি বোধ করেন বরাদ্দকৃত বৈদেশিক  অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে।

“এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না। আমরা শিগগিরই এ বিষয়টি নিয়ে ইআরডির (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) সঙ্গে বৈঠক করে একটি কার্যকর পন্থা হাতে নেব।”                  

নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের দিক নির্দেশনা দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী প্রকল্প পরিচালকদের বলেন, “অর্থবছরের শুরুতেই ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করলে প্রথম তিন মাসে তা শেষ হবে। এছাড়া অর্থবছরের শুরুতেই সামগ্রিক কর্মপদ্ধতি বিশ্লেষণ করলে সহজে বোঝা যাবে বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জটা কোথায়। এ কাজগুলো মাঝপথে শুরু করলে স্বাভাবিকভাবেই প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়।”

প্রকল্প পরিচালকদের ঘন ঘন পরিবর্তন না করতেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন মন্ত্রী।

সভায় প্রকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, কর্মসংস্থান তৈরি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন থেকে প্রকল্প পরিচালকদের ব্যক্তিগত ‘পারফরম্যান্স’ মূল্যায়ন করে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অথবা একজনকে একাধিক প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভায় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সফিকুল আজম, আইএমইডির ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. শহিদ উল্লাহ খন্দকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চলমান ১ হাজার ২৮৭ টি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে ১৯ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।