ইসলামী ব্যাংকিং ‘ফ্রড’: মুহিত

ইসলামী ব্যাংকিংকে গ্রাহকের সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ‘প্রতারণা’ আখ্যায়িত করে এ রকম লেনদেনের সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2015, 03:14 PM
Updated : 1 Feb 2015, 03:14 PM

রোববার জাতীয় সংসদে মন্ত্রী বলেন, “ইসলামী ব্যাংকিং একান্তই একটি ফ্রড (প্রতারণা)। ভুলের ওপর নির্ভর করে ইসলামী ব্যাংকিং হচ্ছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, “দুর্ভাগ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এটি চালু আছে। আইএমএফ পর্যন্ত তাদের অনুমোদন দিয়েছে। এটি বন্ধ করার সুযোগ নেই।”

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার সম্পূরক প্রশ্নে বলছিলেন মুহিত।

তিনি আরও বলেন, “ইসলামী ব্যাংকিং বন্ধ হবে কি হবে না, তা মুসলিম উম্মাহর সচেতনতার ওপর নির্ভর করছে। মুসলিম উম্মাহ যখন বুঝতে পারবে, ইসলামের নামে জঘন্য কাজ চলছে, তখনই এটি বন্ধ করা যাবে।”

“ইসলামে রিবা নিষিদ্ধ। কিন্তু রিবা ও সুদ এক নয়। রিবা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে। এখানে কোনো মানবিকতা নেই। সুদ হচ্ছে কস্ট অব ফান্ড (তহবিলের ব্যয়) বা কস্ট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (প্রশাসনিক খরচ)। ধর্ম নিয়ে যারা বেশি কথা বলেন তারা সুদ আর রিবাকে এক করে ফেলেন।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক সহ দেশি-বিদেশি ২৫টি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

‘খালেদা দেশবিরোধী’

জাসদের নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বিএনপির নেতৃত্বাধীন হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে প্রতিদিন দেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। তবে পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে প্রতিদিন রাষ্ট্রের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা নির্ধারণ করতে সমীক্ষা চালাতে হবে। কারণ এ হরতাল কোনো দলবিরোধী নয়, দেশবিরোধী। খালেদা জিয়া দেশের শত্রুতা করছেন।”

খেলাপি ঋণ ২০ হাজার কোটি

আবদুর রউফের প্রশ্নের জবাবে আবদুল মুহিত জানান, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ব্যাংকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার ৭৯৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে।

ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, জনতা ও সোনালী ব্যাংকে তারকে রহমান, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ও সাঈদ ইস্কানদারদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের পরিমাণ ২৬২ কোটি ১৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। এরমধ্যে ১৬৩ কোটি টাকা ৪৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা খেলাপি।

আ ফ ম বাহাউদ্দিনের (নাছিম) লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, জালনোট প্রতিরোধে ৫০০ টাকার নোটের মতো দেখতে ১০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে।

এ কে এম মাইদুল ইসলামে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকেরা কতটাকা আয় করেন সে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে নেই এবং জানার সুযোগও নেই। বিদেশি নাগরিকেরা তাদের আয়ের ৭৫ শতাংশ নিজ দেশে নিয়ে যেতে পারেন। তারা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২৮ দশমিক ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছে।

এর আগে বিকেল পৌনে ৫টায় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।