‘দিন আনি দিন খাই’ যারা, চরম দুরবস্থায় তারা

ঢাকা শিশু পার্কের সামনে চটপটি-ফুসকা বিক্রি করেন মানিক মিয়া, পার্কে বেড়াতে আসা মানুষরাই তার প্রধান খরিদ্দার, আর প্রতিদিনের আয়েই চলে তার সংসার।

শেখ আবদুল্লাহবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2015, 07:13 AM
Updated : 24 Jan 2015, 07:19 AM

টানা অবরোধের মধ্যে গাড়িতে আগুন দেওয়া আর বোমাবাজির কারণে পার্কে বেড়াতে আসা মানুষের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এখন ছুটির দিনেও ভিড় দেখা যাচ্ছে না সেখানে।

মানুষ কমে যাওয়ায় মানিকের বেচাকেনাও নেই বললেই চলে, তবুও নিয়মিত দোকান সাজিয়ে বসেন তিনি, যদি বেচা-বিক্রি হয়। 

মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লোকজন আসছে না, বেচাবিক্রি একদম নেই। কোনোদিন দোকান খুলছি, আবার কোনো কোনো দিন খোলার অবস্থাও হচ্ছে না।”

শিশু পার্কের টিকিট বিক্রেতা পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাধারণ সময়ের তুলনায় পার্কে দর্শনার্থী অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। কোনো কোনো দিন হাতেগোনা কিছু দর্শনার্থী আসছেন।”

তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা চলার কারণে শিশু পার্কে মানুষ কম আসছেন বলে তিনি মনে করেন।

অন্য বছরগুলোতে শীতকালে আয় ভালই হত মানিকের, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় তার এবারের শীতকালটা অন্যরকম।

মানিক বলেন, “দোকানের বেচাকেনা থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।”

শিশু পার্কের সামনে বাচ্চাদের খেলনা, মেয়েদের সাজসজ্জার পণ্য, গৃহস্থালি পণ্য, খাবারের শতাধিক দোকানের পাশাপাশি বাদাম, হাওয়াই মিঠাইয়ের কিছু ভ্রাম্যমাণ হকারও বসেন নিয়মিত।

ক্ষুদ্র আয়ের এই বিক্রেতার সবার অবস্থা মানিকের মতো। এরা সবাই দিনের রোজগার দিয়েই সংসার চালান, কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার আশু নিরসনের কোনো সম্ভাবনা না দেখে উদ্বিগ্ন তারা।   

ঢাকা শিশু পার্কের মতো ঢাকার লাখখানেক হকারের অবস্থাও একই। অবরোধের মধ্যে কোনো কোনো দিন ফুটপাতের দোকানগুলোকে বন্ধও দেখা যাচ্ছে।   

ফুটপাতের বিক্রেতারা বলছেন, মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে কম, যারা বের হচ্ছে তারা কাজ শেষ করে দ্রুত ঘরে ফিরছে, ফলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছে কম।