বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধের মধ্যে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব একেএম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগই ছিল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একমাত্র বাধা। এখন কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এগুলো মোকাবিলা করেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভরশীল জাতি হওয়ার জন্য নিজস্ব সম্পদ ব্যবহারের ওপরও জোর দেন বলে জানান শামীম চৌধুরী।
১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৩০ বছর পর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই বৈঠক হল।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, পরিকল্পনা সচিব, পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব, আইএমইডি সচিব।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্বশীল অর্থনীতিবিদদের নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য তখন নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে কমিশন; যার মধ্যে অন্যতম ছিল ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা।
পরে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দ্বি-বার্ষিক দারিদ্র্য বিমোচন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে আবার পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করে এবং এর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা অংশ হিসেবে ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করা হয়।
আগামী জুনে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মেয়াদ শেষ হবে এবং জুলাই থেকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে।
প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বিষয় ও বাস্তবায়ন কিভাবে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
“উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে অর্থের জোগান কিভাবে হবে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।”
পরিকল্পনা কমিশনকে কিভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। পাশাপাশি আইএমইডি ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর কার্যালয় জেলা পর্যায়ে বিস্তার করাসহ এ দুটি বিভাগকে আরও শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রেস সচিব বলেন, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পাটজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এছাড়া আইএমইডিকে সুপারভিশন বাড়াতে এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করা কাজ দ্রুত শেষ করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।”
বৈঠকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের পদমর্যাদা বাড়ানোর প্রস্তাবও ওঠে বলে জানান প্রেস সচিব।