আবিষ্কার আমার নয়, আমি ব্র্যান্ডিং করছি: ইউনূস

বিশ্বব্যাপী সামাজিক ব্যবসার ‘ব্র্যান্ডিং’ করছেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2014, 11:11 AM
Updated : 25 Dec 2014, 11:17 AM

“সামাজিক ব্যবসা যে আমিই প্রথম আবিষ্কার করেছি, তা নয়। এটা অনেক আগে থেকেই ছিল। আমি এটাকে ব্র্যান্ডিং করছি। কিছু নিয়ম কানুনের মধ্যে যেন পরিচালিত হয়।”

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা সেন্টার লিমিটেড আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য নোবেল পদক পাওয়া এই বাংলাদেশি।

চট্টগ্রাম ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনূস, যিনি তার কাজের শুরুটা করেছেন নিজের এই জেলাতেই।   

সামাজিক ব্যবসার ধরন তুলে ধরে ইউনূস বলেন, এটা সাধারণ ব্যবসার মতো নয়। সামাজিক ব্যবসায় জরুরি সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানে ব্যবসায়িক ধারণাভিত্তিক প্রচেষ্টা। সাধারণ ব্যবসায় মুনাফা ব্যক্তিনির্ভর আর সামাজিক ব্যবসা সমাজের কল্যাণের জন্য।  

“সামাজিক ব্যবসা কোনো দান খয়রাতের বিষয় নয়। মুনাফা অর্জনের বিষয়ও নয়। সমাজহিতকরণ বিষয়। এক বছর বিনিয়োগ করলেন। আপনার টাকা আপনি ফেরত পেলেন। যে মুনাফা হল তা দিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করলেন। অর্থাৎ কৈ-এর তেলে কৈ ভাজা।”

অনুষ্ঠানে মূল আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রশ্ন করার সুযোগ রাখা হয়।

এসময় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডা. ফজলুল হক তাদের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে বলেন, ৩৫ বছর আগে তারা এই সামাজিক ব্যবসা শুরু করেন।  

“উদ্যাক্তাদের কেউ এখান থেকে মুনাফা করেন না। এটা এখন ৬০০ শয্যার একটি জেনারেল হাসপাতাল। এখানে ১০ বছর ধরে চিকিৎসা বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হয়, পাশাপাশি একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটও আছে।”

তখন ইউনূস সামাজিক ব্যবসা ‘ব্র্যান্ডিংয়ের’ কথা বলেন। ওই হাসপাতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আপনারটা সামাজিক ব্যবসার মতো, তবে সামাজিক ব্যবসা নয়। হয়ত কোম্পানি হিসেবে আপনার প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত নয়। সামাজিক ব্যবসায় মালিক থাকতে হবে, এটা কোম্পানি হতে হবে।”

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা সেন্টার লিমিটেডের পরিচালক আমীর হুমায়ন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যাদের ধারণা আছে কিন্তু টাকা নেই তাদের জন্যই এই প্রতিষ্ঠান।

কেউ ব্যবসার ধারণা নিয়ে এলে তার সম্ভাব্যতা যাচাই করে অর্থায়ন করে চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা সেন্টার।

এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা সেন্টারের ৩১ জন সদস্য আছে। জানুয়ারি থেকে সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানান আমীর হুমায়ন।

বেসরকারি ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সিকান্দর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক ও চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এম এ সালাম।