কৃষি ঋণের সুদহার কমলো

কৃষি ও পল্লী ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হারের সীমা দুই শতাংশ কমিয়ে ১১ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2014, 03:11 PM
Updated : 21 Dec 2014, 03:11 PM

নতুন এই সুদের হার আগামী বছরের শুরু থেকে কার্যকর করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেশে কার‌্যরত ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের প্রতি জারি করা সার্কুলারে এতথ্য জানানো হয়েছে।

২০১১ সালের ৯ মার্চ থেকে কৃষি ঋণের বিপরীতে সর্বোচ্চ সুদের হার ১৩ শতাংশ বহাল ছিল।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, “আমানত ও ঋণের সুদ হারের নিম্নমুখী প্রবণতা বিবেচনায় অগ্রাধিকার খাত হিসেবে কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদ হারের ঊর্ধ্বসীমা ১৩ শতাংশের পরিবর্তে ১১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। আগামী ১ জানুয়ারী থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।”

আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় ১৯৮৯ সালের পর থেকে ব্যাংকগুলো নিজেরাই সুদহার নির্ধারণ করতে পারে। তবে বৈশ্বিক মন্দার পরে উৎপাদনশীল খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি, মেয়াদী শিল্প, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি ও রপ্তানিমুখী শিল্পসহ বেশ কয়েকটি খাতে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পরে ২০১১ সালের ৯ মার্চ এক নির্দেশনার মাধ্যমে কয়েকটি খাত ছাড়া সুদহারের উর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করা হয়।

তখন কৃষি ও মেয়াদি শিল্পের ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার নির্ধারণ করা হয় ১৩ শতাংশ, সব ধরনের রপ্তানি ঋণে ৭ শতাংশ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য (চাল, গম, চিনি, ভোজ্য তেল, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর) আমদানিতে সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ১২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।

২০১২ সালের ৪ জানুয়ারিতে আরেক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রাক-জাহাজীকরণ রপ্তানি ঋণ ও কৃষি ছাড়া অন্যান্য খাতে সুদহারের উর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি ১০ টাকার হিসাবধারী কৃষকদের জন্য ২০০ কোটি টাকার একটি আবর্তশীল পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে সরকার।

এই তহবিল থেকে বিভিন্ন ব্যাংককে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ব্যাংকগুলো নিজেদের ব্যবস্থাপনায় ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করতে পারবে।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এই তহবিল থেকে ট্রাস্ট ব্যাংককে দুই কোটি টাকা দিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০ লাখ টাকা ট্রাস্ট ব্যাংক নিজেদের ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করবে। বাকি দেড় কোটি টাকা সজাগ নামের একটি ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

সেক্ষেত্রে সজাগ সর্বোচ্চ ১৯ শতাংশ সুদ নিতে পারবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও দলটির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নয়া পল্টনে গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সরকার কৃষি ও কৃষককে অবহেলার চূড়ান্ত পর‌্যায়ে নিয়ে গেছে। সরকার কৃষি ভর্তুকি কমিয়েছে। বর্তমানে কৃষি ঋণের সুদ হার ১৯ শতাংশ করা হয়েছে।

“বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থার কোথাও ১৯ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণের লেনদেনের ঘটনা ইতিপূর্বে জানা যায়নি।”