বেতনে মূল্যস্ফীতি বাড়বে না: মুহিত

বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়বে না বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2014, 07:26 AM
Updated : 21 Dec 2014, 07:00 PM

রোববার কমিশনের নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ হাতে পাওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এই সুপারিশ বাস্তবায়নের কারণে মূল্যস্ফীতিতে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না। বাজেট যেভাবে বেড়েছে, কমিশনের সুপারিশে বেতন কাঠামোও সেভাবে বেড়েছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশন সরকারি চাকরীজীবীদের জন্য সর্বোচ্চ ৮০ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা মূল বেতন ধরে নতুন এই কাঠামো সুপারিশ করছে।

আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন এই কাঠামো কার্যকর হলে বিসিএস দিয়ে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদে যোগ দেওয়া একজন চাকরিজীবীর মূল বেতন হবে মাসে ২৫ হাজার টাকা। আগের কাঠামোতে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের মূল বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা।

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতিও বাড়বে বলে এর আগে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজার পরিস্থিতি সহনীয় রাখতে ধাপে ধাপে বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়তি বেতনের অর্থ বিনিয়োগে ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক) মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ২১ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।

নতুন কাঠামো কার্যকর করতে সরকারের বেতন বাবদ খরচ ৬৩.৭  শতাংশ বাড়বে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী রোববার বলেন, “সরকারের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ আছে। সেটা দেশের মানুষেরই অর্থ। এই সুপারিশ বাস্তবায়নের কারণে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে না।”

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করতে শিগগিরই একটি ‘বাস্তবায়ন কমিটি’ করা হবে বলেও জানান মুহিত।

“সচারাচার যা হয়, এই ক্ষেত্রেও তাই হবে। এই সুপারিশ কার্যকরে একটি বাস্তবায়ন কমিটি করা হবে। সেটা আমরা দ্রুতই করব, কারণ এই সুপারিশ আমরা ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন করব।”

অর্থমন্ত্রী জানান, কমিশন নতুন বেতন কাঠামোর পাশাপাশি প্রশাসনিক কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। এসব সুপারিশ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

মুহিত বলেন, “আমরা ক্ষমতা নিয়েছে এই উদ্দেশ্য নিয়ে যে, দেশটি অন্যভাবে পরিচালিত হবে। ২০০৯ সালের অর্থনীতির সাথে বর্তমান অর্থনীতির কোনো রকম মিল নেই। অর্থনীতি অনেক এগিয়েছে। এজন্য প্রশাসনকে দক্ষ ও গতিশীল করা দরকার। আবার প্রশাসনের সন্তুষ্টিও দরকার।”

প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “কমিশন নানা কারণে ধন্যবাদ পেতে পারে। তার এক নম্বর হচ্ছে সময়মতো রিপোর্ট দিয়েছে। দুই নম্বর তারা অনেকগুলো মৌলিক বিষয়ে সুপারিশ করেছে।”

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, “পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে কোনো চাপে পড়তে হবে না। যে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে তার সংস্থান বাজেটে রয়েছে। সরকার চাইলে এ বছরও এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে অসুবিধা নেই।”

সরকারি চাকরিজীবীরা বর্তমানে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ্য ভাতা পাচ্ছেন, যা ২০১৩ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে।