‘খেলাপি ঋণ আদায়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করুন’

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তা আদায়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে ব্যাংকারদের নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর আতিউর রহমান।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2014, 05:08 PM
Updated : 15 Dec 2014, 05:12 PM

সোমবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, “এ বছর সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় থাকলেও ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ প্রতি প্রান্তিকেই সামান্য করে বেড়ে তৃতীয় প্রান্তিকে (সেপ্টেম্বর) এসে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।

‘বিষয়টি উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান ব্যাংকারদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কয়েক দিন পরেই বছরের শেষ প্রান্তিক (ডিসেম্বর) শেষ হবে। তাই আপনারা তার আগেই খেলাপি ঋণের হার কমানোর লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন- এটাই আমি আশা করছি।

“খেলাপি ঋণ আদায়ের ওপর সর্বশক্তি প্রয়োগ করুন।”

লিখিত বক্তব্যের শেষ দিকে এসে গভর্নর ফের খেলাপি ঋণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ আমি আবারও বলছি, ডিসেম্বর প্রান্তিকে আপনাদের প্রধান লক্ষ্য হবে খেলাপি পরিমাণ ও হার উভয়টাই কমানো। এ লক্ষ্যে আপনারা আপনাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও দূরদর্শিতা প্রয়োগ করবেন বলে আমি আশা করছি।”

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় দেশের অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক রয়েছে। এ বছরই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এখনও তা ২২ বিলিয়নের উপরে।

“বছরের শেষভাগে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির বিপরীতে এলসি খোলা ও পেমেন্ট বাড়ায় ব্যাংকিং খাতে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়েছে। এজন্যে ডলার-টাকা বিনিময় হারও একটু নড়েচড়ে উঠেছে।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত জুনে ডলার-টাকা বিনিময় হার ছিল ৭৭ টাকা ৬৩ টাকা। এখন তা বেড়ে  ৭৭ টাকা ৮৮ পয়সায় উঠেছে।

‘মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমছে’ তথ্য জানিয়ে আতিউর রহমান বলেন, জুন মাসে গড় এবং পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৭ দশমিক ৩৫ ও ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। নভেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৭ দশমিক ১০ ও ৬ দশমিক ২১ শতাংশ।

‘ব্যাংক ঋণের সুদের হার ধীরে ধীরে কমলেও তা কাঙ্ক্ষিত নয়’ উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, “এখনও ঋণের গড় সুদহার ১২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের ব্যাংকার্স সভায় আমি বলেছিলাম, দেশে প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে সুলভ বিনিয়োগ আবশ্যক। তাই শিল্প ঋণের সুদহার কীভাবে যুক্তিসঙ্গত মাত্রায় আরও কমানো যায় সে বিষয়ে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

সভায় ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা, সুশাসন, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতে ব্যাংকারদের নির্দেশনা দেন গভর্নর।