ঋণ পুনঃতফসিলে ‘বিশেষ ছাড়’ চায় ব্যাংকগুলোও

ব্যবসায়ীদের পর এবার ‘বিশেষ ছাড়ে’ খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়ার দাবি তুলেছেন দেশের ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2014, 03:17 PM
Updated : 15 Dec 2014, 05:08 PM

একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার সময়ও এক বছর বাড়ানোর আবদার করেছেন তারা।

সোমবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব দাবি করা হয়।

বৈঠক শেষে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্ষতি হয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের নীতিমালায় কিছুটা ছাড় দিয়েছিল, যা গত জুনে শেষ হয়েছে।

“সম্প্রতি আবার খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এজন্য আমরা বলেছি, ২০১৪ সালের জন্যও একটি ‘বিশেষ ছাড়’ দেয়া হোক।”

এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, “এছাড়া পুঁজিবাজারে ব্যাংকের লোকসানের বিপরীতে প্রভিশন রাখার বিষয়েও একবছর সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে।”

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের আগের মতো এই সাধারণ সুযোগ দেওয়া সম্ভব কি না তা গভর্নর পর‌্যালোচনা করে দেখবেন বলে জানান আলী রেজা ইফতেখার।

“তবে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে এ সুবিধা থাকবে সবার জন্য। আর পুঁজিবাজার বিষয়ে আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে জানাবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।”

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের দাবির প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব বিবেচনায় নিয়ে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর কৃষি ও শিল্প খাতের ঋণ পুনঃতফসিলের শর্ত শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের ঋণ পুনঃতফসিলের শর্তেও শিথিলতা আনা হয়।

ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত ১৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্টের (এককালীন নগদ জমা) পরিবর্তে ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ ডাউন্ট পেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ নবায়ন করার সুযোগ পান, যা গত ৩০ জুন থেকে প্রত্যাহার করে নেয় হয়।

এই ছাড় দেওয়ায় জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ কমে যায়।

এর পর আবার খেলাপি ঋণ বেড়ে সেপ্টেমম্বর শেষে ৫৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।

তবে গভর্নর আতিউর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার জন্য ব্যাংকারদের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “অর্থনৈতিক সূচকগুলো ইতিবাচক থাকলেও প্রতি প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ, বিষয়টি উদ্বেগজনক। বছরের শেষ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কমানোর বিষয়ে আপনারা কার‌্যকরী উদ্যোগ নেবেন। এজন্য আদায়ের ওপর সর্বশক্তি প্রয়োগ করুণ।”

এছাড়া ঋণের সুদহার কমাতে অতি মুনাফার প্রবণতা কমানো এবং সার্ভিস চার্জ যৌক্তিকভাবে আদায়ের পরামর্শ দেন গভর্নর।

বৈঠক শেষে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা স্প্রেড কমানোর মাধ্যমে সুদ হার কমানোর পরামর্শ দিয়েছি। খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য বলা হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসুক।